Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতিবছর ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৪৩ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:১৮

ঢাকা: দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলা হাসপাতালেই প্রচুর চিকিৎসক প্রয়োজন। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালেও চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে মানুষ ঘুরে ঘুরেও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। আর তাই দেশে প্রতিবছর অন্তত ২ হাজার করে চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও এবি পার্টির আহ্বায়ক মেজর (অব.) অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওহাব মিনার।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ৪২তম বিশেষ বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

মেজর (অব.) অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। চিকিৎসক সংকটের কারণে সাধারণ মানুষ, বিশেষত গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে সঠিক চিকিৎসাসেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, চিকিৎসকের অভাবে তৃণমূল পর্যায়ের অসংখ্য মানুষ বিনা-চিকিৎসায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। কেউ কেউ ভিটেমাটি বিক্রি করে চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোর দারস্থ হচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানে দ্রুত প্রশিক্ষিত চিকিৎসকদের নিয়োগ প্রদান করা জরুরি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যেহেতু ৪২তম বিসিএসের প্রায় ২ হাজারের মতো চিকিৎসক রেডি আছে, সরকারের উচিত তাদের থেকে সেই ঘাটতি পূরণ করা।

ডা. আব্দুল ওয়াহাব মিনার বলেন, ৪২তম বিসিএসের এই ক’জনই কিন্তু দেশের চিকিৎসা সবার ঘাটতি পূরণ করতে পারবে না। এরপর প্রতিবছর প্রয়োজনে নতুন বিসিএস থেকে আরো দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে। দেশের জনসংখ্যা যেমন প্রতিনিয়ত বাড়ছে, বিভিন্ন রোগবালাইও দিন দিন বাড়ছে। সে অনুযায়ী যদি আমাদের চিকিৎসক যুক্ত না হয়, তাহলে দিন দিন চিকিৎসা বৈষম্য বাড়তেই থাকবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছি, এই চিকিৎসকরা ও সেদিন আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল। আমরা কেন আন্দোলন করেছি? আমরা চেয়েছি প্রতিটি সেক্টর থেকে বৈষম্য দূর হোক। তাহলে এখনও কেন বৈষম্য নিরসনে চিকিৎসকদের আন্দোলন করতে হয়? এখনও কেন মানুষকে রাস্তায় ঘুমাতে হবে? এখনো কেন মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে? এদিকে যাদের চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকার কথা, অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে অস্ত্রোপচারে ব্যস্ত থাকার কথা, তাদের কেন ন্যায্য দাবি আদায়ে প্রেসক্লাবে আন্দোলন করতে হবে?

মানহীন মেডিকেল বন্ধের দাবি জানিয়ে ডা. আব্দুল ওয়াহাব মিনার বলেন, প্রতিবছরই মানহীন বেশ কিছু মেডিকেল কলেজ তৈরি হচ্ছে। গত ১৬ বছরে রাজনৈতিক বিবেচনায় মেডিকেল কলেজ অনুমোদন পেয়েছে, যেগুলোতে কোন রোগী নেই। সেগুলোতে আমরা দেখেছি যে, পরীক্ষার সময় মেডিকেল স্টুডেন্টদের রোগী বানিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। আমি নিজেই সে পরীক্ষা নিয়েছি।

তিনি বলেন, স্টুডেন্টদের অ্যাজমা রোগী বানিয়ে দিনব্যাপী পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এসব মানহীন মেডিকেল কলেজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্ধ হওয়া উচিত। এই মেডিকেলগুলো থেকে কখনই ভালো ডাক্তার বের হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, আমেরিকার প্রতি ১০০ জনে দুইজন ডাক্তার। আমাদের তো তাদের সাথে তুলনা করে ডাক্তার বানালে হবে না। এত ডাক্তার দিয়ে আমাদের কী হবে, যদি তারা মানসম্মত না হয়? এ বিষয়গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের উর্ধতন কর্তাদের ভাবতে হবে এবং দ্রুততম সময়ে স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ৪২ তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ডা. মো. রেজওয়ান কবীর, ডা. ফাতেমা আক্তার ও ডা. আশিক আহমেদ।

সারাবাংলা/এসবি/আরএস

চিকিৎসক সঙ্কট স্বাস্থ্য সেবা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর