Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘৩ রোগে আক্রান্তদের বিদেশে যাওয়া কমাতে কাজ করছে সরকার’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০০:২৫ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০২:০৯

ঢাক: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে সেবাগ্রহীতা ও সেবাদাতাদের মধ্যে দূরত্ব থাকায় ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের চিকিৎসা সেবা ভালো নয়। তবে দেশে তিন রোগে আক্রান্ত রোগীদের বিদেশ মুখাপেক্ষিতা ঠেকাতে আমরা কাজ করছি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ক্যানসার। বাকি দুটি রোগের নাম দুয়েক দিনের মধ্যে জানানো হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) অ্যালায়েন্স ফর হেলথ রিফর্মস বাংলাদেশের আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চিকিৎসা সেবা: বিদেশ মুখাপেক্ষিতা থেকে উত্তরণের উপায়’ সংক্রান্ত অংশীজন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। আয়োজনের সহযোগী ছিল ইউকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, বৈষম্যহীন স্বাস্থ্যসেবার বাস্তবায়ন করা আমাদের লক্ষ্য। দেশের স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা মেরামত অযোগ্য। আমরা এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা যথাযোগ্য করতে কাজ করছি।’

তিনি বলেন, যারা বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে তাদের মধ্যে কেউ যাচ্ছে প্রয়োজনে, আবার কেউ যাচ্ছে পারসেপশনের জন্য। প্রাথমিকভাবে তিনটি রোগের রোগীদের বিদেশ মুখাপেক্ষিতা ঠেকাতে কাজ করছে সরকার। এর জন্য বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে আমরা প্রণোদনা দেবো। সরকারিভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এই তিন রোগের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

দেশে ও বিদেশে যদি একই মানের চিকিৎসার খরচ একই রকম হয়, তাহলে মানুষ যেন দেশেই চিকিৎসা করে তার জন্য কাজ করার প্রত্যয় জানান ডা. সায়েদুর রহমান। বলেন, বিদেশমুখিতা ঠেকাতে যেসব আইন প্রয়োগ করা যায় সেগুলো প্রয়োগ করা হবে। আরও যদি কোনো আইন প্রণয়ন ও সংশোধনের প্রয়োজন হয় তার জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

অ্যালায়েন্স ফর হেলথ রিফর্মস বাংলাদেশের পক্ষে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, বিদেশে চিকিৎসার জন্য যারা যাচ্ছেন তাদের ওপর কয়েক বছর আগে একটি গবেষণা হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, চিকিৎসা সেবায় অসন্তুষ্টি, অপেক্ষমাণ সময় বেশি হওয়া, নির্ভুল রোগ নির্ণয় না হওয়া, খরচ বেশি হওয়া ও চিকিৎসকদের ব্যবহারে অসন্তুষ্টিসহ কয়েকটি কারণে মানুষ বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে। তাদের বিদেশমুখিতা ঠেকাতে হলে দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে হবে।

সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা দিয়ে ভালো কিছু করা যাবে না। আমরা জোড়াতালি দিয়ে চলছি। একদিনে রাতারাতি পরিবর্তনও করা কঠিন। যা রয়েছে, তা দিয়েই প্রাথমিকভাবে কাজ চালাতে হবে।

সভায় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, চিকিৎসকদের মধ্যে দলীয় রাজনীতি মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারানোর জন্য দায়ী। চিকিৎসকদের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) রয়েছে। কোনো দলীয় রাজনীতির প্রয়োজন নেই। দুর্নীতি ও অবস্থাপনা বন্ধ না করলে স্বাস্থ্য খাতে ভালো করা যাবে না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বিপুলসংখ্যক রোগী দেশের বাইরে যায়, তা সত্য। অনেকে শখের কারণে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যান। তবে বাংলাদেশে সুপার স্পেশালটির চিকিৎসা কম। সরকারি কর্মকর্তা, সরকারের কর্তাব্যক্তিরা যদি দেশের বাইরে চিকিৎসা নেওয়া বন্ধ করেন, তাহলে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও বিকাশিত হবে।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানী ডা. আহমেদ এহসান বলেন, বিশ্বে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের মেডিকেল ট্যুরিজম। এর ৪০ শতাংশই এশিয়া। বিদেশে চিকিৎসা নির্ভরশীলতা কমাতে হলে তথ্যের ওপর নির্ভর করে নীতি প্রণয়ন করতে হবে।

সভায় আরও কথা বলেন সরকারের সাবেক সচিব আবুল কালাম আজাদ, রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সের সাবেক অধ্যাপক ড. এ কে এম নুরুন্নবীসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

ক্যানসার ডা. মো. সায়েদুর রহমান বিদেশে চিকিৎসা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর