শিক্ষার মান উন্নয়ন প্রকল্প
ব্যয় কমিয়ে মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব
১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৪৪ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:২৬
ঢাকা: ১৩ বছরেও শেষ হয়নি শিক্ষার মান উন্নয়ন প্রকল্প। সার্বিকভাবে ব্যয় কমলেও দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে সময়। অতি সম্প্রতি প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাবে মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় ‘তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজসমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধিত পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) উপস্থাপন করা হয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কার্যক্রম, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে উপবৃত্তি প্রদান কার্যক্রম বাস্তবায়নে এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অধিক হারে শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে বেসরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি হার বেড়েছে। কিন্তু এ ভর্তি হার বৃদ্ধির তুলনায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ সুবিধা তেমন বাড়েনি। এ প্রেক্ষিতে বর্তমানে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা টেকসই প্রযুক্তিগত শিক্ষার ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২০১২ সালে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে একনেকে প্রথম সংশোধন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ প্রথমবার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় দ্বিতীয় সংশোধন, পরিকল্পনা কমিশন দ্বিতীয়বার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ প্রথম আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় করে। এতে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়িয়ে ৫ হাজার ৫৬৮ কোটি ৬০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি চলমান রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) বৈঠক সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ বছর ধরে চলমান প্রকল্পটির গত জুন পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৮৮ শতাংশ। এর আগের সংশোধনী মতে, চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ অবস্থায় প্রকল্পটির ব্যয় সর্বশেষ অনুমোদিত প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ১৫১ কোটি ৭৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা কমিয়ে মোট ৫ হাজার ৪১৬ কোটি ৮৪ লাখ ১২ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ এবং মেয়াদকাল আরও ৬ মাস বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই ধরনের মাল্টি মিডিয়া শ্রেণিকক্ষ ও আইসিটি ল্যাব স্থাপন, শ্রেণিকক্ষের বিভিন্ন পূর্তকাজ ও আসবাবপত্র, বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামাদির মেরামত ও সংরক্ষণ এবং ক্যাম্পাস পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও সবুজায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রকল্প দলিল সংশোধন ও সমন্বয় করা প্রয়োজন। এছাড়া মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের জন্য নির্ধারিত সমন্বিত হার্ডওয়্যার প্রতিস্থাপন, প্রকল্পভুক্ত ১ হাজার ৬১০টি কলেজের মধ্যে কাজ বাকি আছে এমন অবশিষ্ট ৮০৪টি কলেজে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষের জন্য বরাদ্দ করা উপকরণগুলো সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রস্তাবে বলা হয়, আইসিটি ল্যাবের জন্য আসবাবপত্র ও নির্ধারিত সমন্বিত হার্ডওয়্যার প্রতিস্থাপনের জন্য এক হাজার ৬১০টি কলেজের মধ্যে ৯০৭টি কলেজের বিদ্যমান প্রকল্প দলিল অনুযায়ী আইসিটি ল্যাব স্থাপন কাজ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট ৭০৩টি কলেজ আইসিটি ল্যাব স্থাপন বাকি রয়েছে। এছাড়া, নতুন চারটি কলেজ প্রতিস্থাপন করা হবে। প্রতিস্থাপিত চারটি কলেজ ভবন নির্মাণ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী অবশিষ্ট কলেজগুলোর মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাবের জন্য আসবাবপত্র ও নির্ধারিত সমন্বিত হার্ডওয়্যার স্থাপন এবং আসবাবপত্র সরবরাহের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো প্রয়োজন।
সারাবাংলা/জেজে/আরএস