Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইসকন নিষিদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান মুফতি ইজাহারের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:০১ | আপডেট: ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:০৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ- ইসকনকে নিষিদ্ধের পদক্ষেপ নিতে প্রধান উপদেষ্টা এবং আইন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর ও ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফ্তি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইসকনকে ভারতীয় দালাল এবং দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী এ আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে খুন এবং মসজিদ ভাংচুরের প্রতিবাদে তিনি এ বিবৃতি দিয়েছেন ইসলামী ঐক্যজোটের প্রেস সেক্রেটারি আলী হাসান সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে অস্থির করতে, দেশকে বেকায়দায় ফেলতে ইসকন ধর্মীয় গণ্ডির বাইরে গিয়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। তারা দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিনষ্ট করার জন্য, ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য নানামুখী অপতৎপতা চালাচ্ছে।’

হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম জনসাধারণকে ইসকনের ফাঁদে পা না দেয়ার এবং উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অতীতে বিভিন্ন দেশ ইসকনের কার্যক্রমের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। মালেশিয়া, সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ এই উগ্রবাদী সংগঠনটি। বর্তমান সরকারের উচিত জাতীয় স্বার্থ এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আইনগত পদক্ষেপ নেয়া।’

অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমের কাছে ইসকনকে নিষিদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইসকন আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ডের বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক বিষয়ে অংশ নিচ্ছে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। ইসকন বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে আর্থিক সহায়তা পায়, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিস্থিতিতে প্রভাব বিস্তারের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে বলে এদেশের জনগণ মনে করেন।’

বিজ্ঞাপন

‘ইসকন বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরে আন্তর্জাতিক মতামত প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে চাপ সৃর্ষ্টি করতে চাচ্ছে। তারা বাংলাদেশে এমন কিছু কার্যকলাপে যুক্ত হচ্ছে, যা রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। আগে এটি ধর্মীয় সংগঠন ছিল, তারা এখন ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাই ইসকন নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি।’

ইজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘হিন্দু ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে ইসকন। তাই সাধারণ হিন্দু এবং ইসকনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ইসকনের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হলো- তারা হিন্দু ধর্মের প্রচলিত ব্যাখ্যার পুনঃবিবেচনা করে থাকে। ইসকনের গ্রন্থগুলোতে কৃষ্ণকে সর্বোচ্চ দেবতা হিসাবে তুলে ধরা হয়, যেখানে শিব ও দূর্গার মতো অন্যান্য দেবতার অবমূল্যায়ন করা হয়।’

‘১৯৬৬ সালের ১৬ জুলাই নিউইয়র্ক সিটিতে এ সি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের মাধ্যমে গৌড়ীয় বৈষ্ণব হিন্দু সংগঠন হিসেবে পরিচিত ইসকন প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মায়াপুরে অবস্থিত ইসকনের প্রধান কার্যালয় এখন ইহুদিদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ইসকন ভারতীয় দূতাবাস থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পায় অনুদান হিসেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেধাবী আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে ইসকনের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। হাটহাজারী ও চট্টগ্রাম শহরে ইসকন যেসব জায়গা জোরপূর্বক দখলে রেখেছে সেগুলো উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। হাটহাজারীতে সাধারণ হিন্দুদের জায়গা জোরপুর্বক দখল করে রেখেছে ইসকন, সেগুলো সাধারণ হিন্দু ভাইদের ফেরত দিতে হবে।’

সারাবাংলা/আরডি/এসআর

ইসকন চট্টগ্রাম মুফতি ইজাহার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর