নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক করতে হবে: প্রধান বিচারপতি
১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০০:০৫
ঢাকা: আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হলে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত নবীন আইনজীবীদের এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমার নিয়োগের পর থেকে আমি আমাদের বিচার বিভাগের পূর্ণ সক্ষমতা বাস্তবায়নে বাধাগুলোর সমাধান করার গুরুত্ব অনুভব করেছি। সেই উদ্দেশ্যে গত ২১ সেপ্টেম্বর আমি ‘বিচার বিভাগের সংস্কারে রোডম্যাপ’ ঘোষণা করেছি। এটি বিচার বিভাগের অখণ্ডতা ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আমার দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তি।
দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে পৃথক একটি সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বলে জানান। বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগে স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে একটি ‘বিচারিক নিয়োগ পরিষদ’ গঠনের প্রস্তাব করেছেন তিনি। জেলা বিচারকের পদায়ন ও স্থানান্তর প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন। এ ছাড়া আইনি সহায়তা ব্যবস্থায় ‘সক্ষমতা পরীক্ষা’ প্রবর্তন করেছেন, যে প্রক্রিয়াটি আর্থিক ও ব্যবহারিক প্রতিবন্ধকতার কারণে কেউ যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন হয়েছে, যা আগে পার্লামেন্টের কাছে ছিল। বিচার বিভাগ আলাদা করার জন্য সরকারকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নবীন আইনজীবীদের উদ্দেশে ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, আদালতে নতুন যোগদানকারী সদস্য হিসেবে নতুন আইনজীবীদের কাছে আমার আহ্বান— সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও পেশাগত দায়িত্ববোধ বজায় রাখুন। নৈতিকতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতি আপনাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তকে গঠন করবে এবং জনগণের আস্থার ভিত্তি স্থাপন করবে। এই পেশা চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ, কিন্তু সাহস, সততা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকার দিয়ে আমরা আমাদের জাতির প্রতি দায়িত্ব পালন করতে পারি। চলুন, আমরা বেঞ্চ ও বারকে একসঙ্গে নিয়ে আইনের শাসনের রক্ষক হিসেবে কাজ করি।
কর্মশালা শুরুর আগে চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে ৫ আগস্ট ঘিরে আন্দোলনে হতাহতদের জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
কর্মশালায় আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর
পৃথক সচিবালয় প্রধান বিচারপতি বাস্তবায়ন দাবি সৈয়দ রেফাত আহমেদ