সবজি বাজারে স্বস্তি, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণহীন
২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১২:১৫ | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:০৭
ঢাকা: রাজধানীর কাঁচাবাজারে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ছে। এতে গত সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কিছুটা কমেছেও। তবে গোল আলুর বাজার এখনো নিয়ন্ত্রণহীন। পুরাতন আলুর দাম অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় স্বল্প আয়ের মানুষকে কিছুটা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।
এদিকে চলতি সপ্তাহে মাছ-মাংস, ডিম-মুরগির দাম না বাড়লেও তা উচ্চ মূল্যে স্থির রয়েছে। অন্যদিকে বাজারে মোটা চাল, খোলা সয়াবিন ও পাম তেল, পেঁয়াজ, চিনি ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও, শ্যামলী ও কল্যাণপুরের কয়েকটি বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
আগারগাঁওয়ের সবজি বিক্রেতা বিল্লাহ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, বাজারে এখন শাক-সবজির ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। এ জন্য অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন বেশির ভাগ শাক-সবজির দাম কম। আগামী সপ্তাহে আরও কমতে পারে।
শ্যামলীর সবজি বিক্রেতা আহাদ মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, সবজির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমেছে। এখন কিছুদিন সব ধরনের শাক-সবজির দাম কমই থাকবে বলে মনে হচ্ছে। তবে পুরাতন আলু আর বাজারে আসা নতুন আলুর দাম প্রায়ই একই হয়ে যাচ্ছে। পুরাতন আলুর দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেড়ে আজ ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আর নতুন আলু ১১০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবারের বাজারে কাঁচা মরিচ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, ধনে পাতা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি (মাঝারি আকারের) ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৭০-৭৫ টাকা, উস্তা ৬০-৬৫ টাকা, গোল বেগুন (কালো) ৬০-৭০, লম্বা বেগুন ৫৫-৬৫ টাকা, সিম ৯০-১০০ টাকা, কচুর মুখী ৫০-৬০, কচুর লতি ৬০-৬৫, কাঁকরোল ৬০-৬৫ টাকা, বরবটি ৬৫-৭০ টাকা, পটল ও ঢেড়স, ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া টমেটো ও গাজর ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্য সবজির মধ্যে ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, আলু ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। চালকুমড়া ও মাঝারি আকারের পাতি লাউ প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে প্রতি আঁটি লাউশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা এবং পালং শাক, মূলা শাক ও লাল শাক ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। মাঝারি আকারের লেবুর দাম প্রতি হালি ২০ থেকে ৩০ টাকা। বাজারভেদে সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা হেরফেরও দেখা যায়।
শুক্রবারের বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা ও আদা ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ দিন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজারে মুরগি বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ব্রয়লার ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা, সোনালি জাতের মুরগির দাম ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা ও লেয়ার মুরগি ৩০০ থেকে ৩১০ কেজি দরে দরে বিক্রি করছি।’ মুরগি আর ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে।
এ দিন বাজারে ফার্মের বাদামি রঙের ডিম প্রতি ডজন ১৫০ টাকা, ফার্মের মুরগির সাদা ডিম প্রতি ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, হাঁসের ডিম প্রতি হালি ৮০ টাকা ও কোয়েল পাখির ডিম ৫০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মুরগির ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। গত ১৬ অক্টোবর থেকে তা কার্যকর করা হয়। ওই সময় উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সায় বিক্রির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। সে হিসেবে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ডজন কিনতে খরচ হওয়ার কথা ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৫০ টাকার নিচে নামেনি।
এদিকে বাজারে দেড় কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজনের রুই মাছ ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, গুলশা ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, চিংড়ি মাঝারি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, কাঁচকি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, মলা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। মাঝারি সাইজের তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, সিলভার কার্প ও চাষের কই কেজিপ্রতি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকার আশেপাশে বিক্রি হচ্ছে।
এ দিন গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা ও খাসির মাংস ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
এদিকে দুই সপ্তাহ আগে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট ছিল। এরপর সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) কমালে সরবরাহ কিছুটা বাড়ে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, গত চার-পাঁচ দিন ধরে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ আবার কমেছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/আরএস