Sunday 29 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের তাগিদ শিক্ষকদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৫২ | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৬

জাতীয় প্রেসক্লাবে ফাউন্ডেশন অব এডুকেশনাল ট্রান্সপারেন্সি (এফইটি) আয়োজিত, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী চিরায়ত সম্পর্কের পুনরুত্থান’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

ঢাকা: বর্তমান সময়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্কের ছেদ পড়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা। এরজন্য অভিভাবক, রাষ্ট্র, সমাজ এমনকি নিজেদেরও দায়ী করেছেন তারা। সম্পর্কের এই দূরত্ব কমিয়ে আনতে শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তারা।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ফাউন্ডেশন অব এডুকেশনাল ট্রান্সপারেন্সি (এফইটি) আয়োজিত, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী চিরায়ত সম্পর্কের পুনরুত্থান’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকরা এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তারা বলেন, শিক্ষার্থীকে কেন রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে হবে। দেশ, রাজনীতি সম্পর্কে তাদের জানানো যেতে পারে। তারা সংবিধান বোঝে না কিন্তু দেশ পরিবর্তনের চিন্তা তাদের তৈরি হয়। ওদের প্রতি যত্ন করলে, ওরা সমাজের প্রতি যত্নশীল হবে। এক্ষেত্রে বাবা মায়ের ভূমিকাও অনেক বড়। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা, ইংরেজি মাধ্যম একেক মাধ্যমে একেক রকম। শিক্ষা ব্যবস্থা যেহেতু মানুষ গড়ার মাধ্যম তাই সেখানে ভেদাভেদ থাকতে পারেনা। প্রতিটি কমিউনিটিতে সমস্কুল থাকা উচিত।

আলোচকরা আরও বলেন, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে সম্পর্ক থাকার কথা সেখান থেকে কিছুটা বিচ্যুতি ঘটেছে। প্রতিদিন বাসের হেল্পার থেকে নানা স্থানে ঝামেলা হচ্ছে। শিক্ষকের দায়িত্ব এখানে শিক্ষার্থীকে বিষয়গুলো বোঝানো। শিক্ষার্থী সমাজে সেতুর মতো কাজ করতে পারেন।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষক গালিব হোসেন বলেন, শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের কিছুটা পতন যে হয়েছে সেটা সত্যি। শিক্ষার্থীরা যত উপরের ক্লাসে যাচ্ছে ততই শিক্ষকদের সাথে দূরত্ব বাড়ছে। এখন দেখতে হবে কেন দূরত্ব বাড়ছে। আসলে আমরা তাদের সময় কতটুকু দিচ্ছি। আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছি। এই পদ্ধতিতে থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক উপল তালুকদার বলেন, ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব আছে বলে মনে করিনা। কোনো কিছুই চিরায়ত নয়, সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন তো হবেই। শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবক ও সরকার এর সমন্বয় ঘটাতে হবে।

বাংলা একাডেমির সভাপতি আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, আশির দশক থেকে প্রযুক্তির বিকাশ ঘটতে শুরু করে। নিজের স্বার্থ যারা রক্ষা করেন, সেসকল মানুষের হাতে চলে যায় টেকনোলজি। তিনি বলেন, এখন থেকে ৪০ বছর আগে এক বিঘা জমিতে যে ফসল হতো এখন তার তিনগুন হয়। খাদ্য, বস্ত্রের অভাব কেটে গেছে। কিন্তু বাস্তবে দেখছি ধনী শ্রেনির হাতে এর নিয়ন্ত্রণও চলে গেছে।

তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে চলতে হবে। বিজ্ঞান সম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩ রকম স্কুল ও পাঠ্যপুস্তক আছে। কিন্তু সংবিধানে লেখা আছে এক রকম থাকবে। বাংলা মাধ্যমের স্কুলে বৃটিশ সরকার ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস ঢুকিয়েছে। তখন অনেকে বলেছেন যে এতে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের কোনো মিল নেই। অনেকে আপত্তি তুলেছিলেন। যে এই শিক্ষা ব্যবস্থা বদলাতে হবে। মানুষ বদলাচ্ছে, পৃথিবী বদলাচ্ছে সেখানে শিক্ষা পদ্ধতি বদলানো স্বাভাবিক। শেখ হাসিনার সময়ে ইংরেজি ভার্সন আবার শুরু হয়েছে। দেশের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা হয়েছে। তারপর পরিবর্তনের উদ্যোগে কিন্তু বিশ্বব্যাংক পয়সা দিয়েছে। এতে কিন্তু তারা তাদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। যে কারনে সরকার নিজের মতো করে কিছু করতে পারেনা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী বলে একটা সংগঠন আসছে। এটা তো রাতারাতি হয়নি। তিনি আরো বলেন সারাদেশে যে ভাস্কর্য ভাঙছে সেটাও এক দিনের কাজ নয়। এসময় তিনি স্বাধীনতার আগে এবং এর পরে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন তুলে ধরেন।

সারাবাংলা/জেআর/এনজে

গোলটেবিল বৈঠক ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর