গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ফের যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো
২১ নভেম্বর ২০২৪ ১০:০২ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:১৭
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ওঠা প্রস্তাবে ফের ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (২০ নভেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে প্রস্তাবটি নিয়ে ভোটাভুটি হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের অন্য ১৪ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।
ওয়াশিংটন জানিয়েছে, এখনই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস হলে স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা উৎসাহিত হবে। ফলে জিম্মিদের উদ্ধার অনেকটা কঠিন হয়ে পড়বে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্টের রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বলেছেন, এই যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব হামাসের জন্য ভয়ঙ্কর বার্তা বয়ে আনবে। কারণ জিম্মি উদ্ধারে আলোচনার টেবিলে বসে সমঝোতা না করলে জিম্মিদের মুক্তিলাভ কখনো সম্ভব হবে না।
বুধবার অনুষ্ঠিত এই ভোটে নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের তীব্র সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, প্রস্তাবটি নিয়ে সমঝোতার প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি স্থায়ী রাষ্ট্রের মধ্যে ১০টি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব উন্থাপন করা।
এতে গাজায় অবিলম্বে, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে জিম্মিদের মুক্তি দাবি করা হয়। তবে একমাত্র স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রস্তাবটি আটকে দেয়।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় ইসরাইলি বন্দিদের কথা ভুলে গেছে। কিন্তু আমরা তা হতে দিতে পারি না। আমরা জিম্মিদের ভুলে যেতে পারি না।
এদিকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের উপদূত মাজেদ বামেয়া। একটি যুদ্ধবিরতি অনেক প্রাণ রক্ষা করতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা এক বছর আগেও সত্য ছিল, এখনও তা আরও বেশি সত্য। একটি যুদ্ধবিরতি সবকিছুর সুরাহা করতে পারবে না, কিন্তু যেকোনো সুরাহার ক্ষেত্রে এটা প্রথম পদক্ষেপ।
তবে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে নিরাপত্তা পরিষদে ওঠা প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে নিরাপত্তা পরিষদে ওঠা চারটি প্রস্তাবেই ভেটো দিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান এ যুদ্ধে ইসরাইলি হামলায় গাজায় প্রায় ৪৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং লক্ষাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এছাড়া উপত্যকাটিতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলে হামলা চালিয়ে ১২০৬ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে। জবাবে ইসরাইল গাজায় প্রায় ১৪ মাস ধরে সামরিক অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ হাজার বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সম্প্রতি ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গাজায় প্রায় ১৭ হাজার শিশু মারা গেছে।
সারাবাংলা/ইআ
গাজায় যুদ্ধবিরতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো