Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সংস্কার আপনাদের কাজ না, তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ নভেম্বর ২০২৪ ২২:২৩ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৩৩

মঙ্গলবার বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: রাষ্ট্রসংস্কারকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ না অভিহিত করে দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে আবারও দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘এই সরকার এখনো স্ট্যাবল হতে পারেনি ওই সব (সংস্কারসহ রাষ্ট্র পরিচালানায় নীতিনির্ধারণ) দিক থেকে। আমরা যেটি বারবার বলে আসছি, এসব (সংস্কার) আপনাদের কাজ না। আপনারা তাড়াতাড়ি নির্বাচন দেন। রাজনীতিবিদরা তাদের কাজ করুক। আমরা তো সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে দিয়েছি। ওখানে দেখেন কোনটা কোনটা আপনারা নেবেন, কোনটা কোনটা নেবেন না।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপিপন্থি সংগঠন ‘সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ’ এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ঠিক করে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। আমি এ কথা তো বলিনি যে এত তারিখের মধ্যে (নির্বাচন) দেন, অত তারিখের মধ্যে দেন। আমরা রোডম্যাপ চেয়েছি। কবে কী করবেন, জানান। সেটা জানালে তো মানুষের মধ্যে আস্থা আসবে। মানুষ তো ইলেকশন চায়।’

নির্বাচন দ্রুত না হলে দেশের সমস্যা আরও বাড়তে থাকবে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘আমরা রাজনীতিবিদরা, যারা একটু বয়স্ক-প্রাজ্ঞ, তারা বলছি নির্বাচন দ্রুত করুন। কেন বলছি? বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য? না। নির্বাচন দ্রুত না হলে সমস্যাগুলো বাড়বে। এখন যারা গণতন্ত্রকে ধবংস করতে চায়, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ধবংস করতে চায়, তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেখুন না কত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। দেশে সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করার জন্য কাজ করা হচ্ছে। ফ্যাকটরি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, যা আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। আর এরা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) কিছুই করতে পারছে না।’

বিজ্ঞাপন

‘কেন করতে পারছে না? কারণ তাদের রাজনৈতিক শক্তি নাই। আজ যদি একটা নির্বাচিত সরকার থাকত, তার পেছনে জনগণ থাকত, তাহলে এটা এত সহজ ছিল? তারপরও আমরাই যতটুকু বন্ধ করার বন্ধ করতে পেরেছি, আমাদের কর্মীরা গিয়ে ওইসব বন্ধ করেছে,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, ‘স্ট্রাইক করেছে ছাত্ররা। কালকে তিতুমীর কলেজকে ছাত্ররা স্ট্রাইক করেছে। ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট জানত না যে এরকম হতে পারে? তাহলে কেন আগে থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না?’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “গতকাল ছেলেদের ব্লকেডের খবর টেলিভিশনে দেখছিলাম। দেখলাম বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষ যে কথাবার্তাগুলো বলছে, সেগুলো গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়। সব জিনিসের দাম বেড়েছে। ‘আমি রিকশা চালাতে পারিনি সারা দিন। আমি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় চার ঘণ্টা ধরে আটকে আছি। আমার গাড়িতে লাউসহ সব কিছু পড়ে আছে, এসব পচে যাবে, নষ্ট হয়ে যাবে। এর জন্য কি আমরা আন্দোলন করেছিলাম,’— এ কথাগুলো আসছিল। এ কথাগুলো আসতে শুরু করেছে। দিস ইজ আ ব্যাড সাইন।”

এসব কথাবার্তার সুযোগগুলো ফ্যাসিবাদের মিত্ররা নেবে বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল। বলেন, “আমাদের যারা শত্রু, এই ফ্যাসিবাদীদের যারা মিত্র, তারা এই সুযোগগুলো নেবে। কথা নাই, বার্তা নাই ঠিক এই সময় এসব দাবি চলে আসছে। এতদিন যে ফ্যাসিস্টরা পিষলো, পায়ের নিচে রেখে দিলো, তখন কিন্তু কেউ কথা বলল না। জিজ্ঞাসা করলে বলে, ‘তখন কথা বলার সুযোগ ছিল না। এখন সুযোগ দিচ্ছে, আমরা বলছি।’ এটা থেকে জাতিকে রক্ষা করার একমাত্র উপায়, সবার সঙ্গে আলোচনা করে অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।”

ফখরুল বলেন, ‘সরকারের লোকজন অনেক সময় অনেক কথা বলছেন। কথা বলে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। ফোকাস এক জায়গায় করুন। সেই ফোকাসটা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করে, প্রশাসনকে ঠিক করে, বিচারব্যবস্থাকে ঠিক করে নির্বাচনের দিকে যান। যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে, বাকি কাজ তারা করবে। আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাব না। আমরা একটা জাতীয় সরকার গঠন করে, যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছে, তাদের নিয়ে দেশ চালাব। সমস্যাটা কোথায়, সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ কিন্তু আপনাদের মধ্যে আসতে শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, ‘কালকে দেখলাম, তারা এখন বলতে শুরু করে দিয়েছেন যে এখন (বাংলাদেশ) ভিন্ন দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা আছে অন্য দিকে যাওয়ার। সে কারণেই আমরা স্পষ্ট করে এই মিটিং থেকে বলতে চাই, প্রথম দিন থেকে বলেছি, এই সরকারের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য, এই সরকারের সাফল্য মানে জনগণের সাফল্য, এই সরকারের সাফল্য মানে এই গণঅভ্যুত্থানের সাফল্য। এরা যদি ফেল করে, তাহলে আমরা ফেল করব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই না শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আবার ফিরে আসুক। চাই না বলেই বারবার করে বলছি— উইজডম… এই উইজডম আপনারা প্রয়োগ করুন, চেষ্টা করুন। আমরা আপনাদের এটুকু বলতে চাই, রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় বাংলাদেশের ভালো করার চেষ্টা করে।’

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী।

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ, এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনের সৈয়দ আলমগীর, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, চিকিৎসক অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক, অধ্যাপক হারুন আল রশীদ, ডা. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব) শামসুল ইসলাম, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম।

সারাবাংলা/এডেজ/টিআর

নির্বাচন বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর