‘আওয়ামী লীগ ভোটের সংস্কৃতিকে যাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিলো’
১৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭
খুলনা: বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, বিগত ১৭ বছর দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ভোটের সংস্কৃতিকে যাদু ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিলো পতিত মাফিয়া সরকার। ১৭ বছর বিনা ভোটের নির্বাচন, রাতের নির্বাচন, আমি-ডামির নির্বাচন, বিভিন্নভাবে ভোটের ব্যবস্থা কুলষিত করে বাংলাদেশে ভোটের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে হাসিনা সরকার। জনগনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি রাজপথে ছিলো। বিএনপির আন্দোলনের এক পর্যায়ে যুক্ত হয়েছিলো ছাত্র-জনতা। আর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জনগনের ১৭ বছরের দাবী ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচিত করা। কিন্তু অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে আসে কিছু ষড়যন্ত্রকারীরা যারা আবারো আমাদের গনতন্ত্র ও ভোটাধিকার নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় খুলনার তেরখাদা উপজেলার আজগড়ায় বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১দফার আলোকে সাম্য ও মানবিক সমাজ বির্নিমানে সম্প্রীতির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনুস তার বক্তব্যে অনেককে আশাহত করেছে। আমরা আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা তার সমস্ত প্রজ্ঞা দিয়ে সমস্যা চিহ্নিত করে নির্বাচনের একটা রূপ রেখা দেবেন। আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি, কারণ নির্বাচন দিলে সমস্যার সমাধান হবে। বিএনপি ক্ষমতায় যায় বা না যায় সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু আজকে যারা ক্ষতি করবার চেষ্টা করছে, তারা তখন পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবে। সংস্কারের জন্য এই সরকার অনেক কমিশন গঠন করেছে। তাদের প্রতি আমাদের এবং জনগণের আস্থা আছে। কিন্তু আমরা চাইব, সেটা দ্রুত শেষ করে নির্বাচনকেন্দ্রিক যে সরকার ব্যবস্থা, সেটির মাধ্যমে আমরা আলোর দিকে এগিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল শুধু কোটাবিরোধী আন্দোলন। ফ্যাসিবাদের ভয়াল থাবায় যখন ছাত্রদের আন্দোলন প্রায় থমকে গিয়েছিল, ঠিক সেই মুহূর্তেই জাতির কাণ্ডারির ভূমিকায় আন্দোলনকে ছাত্রজনতার আন্দোলনে রূপ দিয়েছিলেন দেশ নায়ক তারেক রহমান। দেশের মানুষ ফ্যাসিস্ট সরকার থেকে মুক্তি চেয়েছিল। তবে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের রক্তে ভেজা বিপ্লবকে সফল বলা যাবে না।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের মাধ্যমে আমাদের প্রথম ধাপের বিজয় হয়েছে। তবে পরিপূর্ণ বিজয় না আসা পর্যন্ত নেতাকর্মীদের সুসংগঠিতভাবে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, গুণ্ডা, মাস্তানের জায়গা হবে না উল্লেখ করে হেলাল বলেন, রাষ্ট্রের ভালোমন্দ রাজনীতিবিদরাই ভালো জানেন। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে অনুরোধ সময় ক্ষেপণ না করে নির্বাচনের পথ তৈরি করুন। এবারের গণঅভ্যুত্থান শুধু রাজনীতিবিদদের জন্য ইতিহাস নয়, সবার জন্য শিক্ষা।
বিএনপি নেতা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের লড়াই। বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই। যে ছেলেদের আজ ২০-২২ বছর বয়স, তারা ভোট দিতে পারেনি। তারা ভোট দেওয়া জানে না। তারা আর কত সময় অপেক্ষা করবে? অন্তর্র্বতী সরকার হবে গণতন্ত্রের প্রতীক, গণতন্ত্রের মডেল। তা না করে এই যে প্রলম্বিত করা, এই প্রলম্বিত দেখে আমার মনে হচ্ছে- কোথাও কোনো জটিলতা হচ্ছে।
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা চাঁদাবাজি করে-সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তারা বিএনপির কেউ হতে পারে না। যারা সমাজে বিশৃঙ্খলা করবে তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় এ নেতা বলেন, রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১দফা সুপারিশ দিয়েছি।
১ নং আজগড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক নেতা শেখ ইউসুফ আলীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মোঃ জাহিদুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, বিএনপি নেতা আবু হোসেন বাবু, খান জুলফিকার আলী জুলুসহ বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা ও রুপসা উপজেলা বিএনপি’র বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
সারাবাংলা/এনজে