Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন
আওয়ামী লীগের পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে ব্যর্থ ভারত: টিআইবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:০৯ | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৪১

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ভারতের কার্যক্রম সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ নিয়ে আলোচনা করে টিআইবি

ঢাকা: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে ভারত ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী ১০০ দিনের ওপর টিআইবির পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের মূল প্রবন্ধে এ কথা বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক শাহজাদা এম আকরাম। সূচনা বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। প্রতিবেদন তৈরিতে আরও যুক্ত ছিলেন মো. জুলকারনাইন, ফারহানা রহমান ও মো. মোস্তফা কামাল।

সংবাদ সম্মেলনে ভারত প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ভারত তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক, কূটনীতিক ও কৌশলগত পরাজয় স্বীকার করে নিতে পারছে না। সেই সৎ সাহস তাদের নেই। এ কারণে তাদের কাছ থেকে যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাশা ছিল, সেটি তারা দেখাতে পারছে না। তারা এখনো কর্তৃত্ববাদের সমর্থনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বাংলাদেশকে দেখছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্যে ভারতের যে ভূমিকার প্রত্যাশা ছিল, ইতিবাচক দৃষ্টির প্রত্যাশা ছিল, তারা সেটি পূরণ করতে পারছে না। ফলে সংখ্যালঘু (মাইনরিটি) কার্ড থেকে শুরু করে যেভাবেই হোক না কেন, বাংলাদেশে সম্ভাব্য অস্থিতিশীলতা তৈরিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করার ব্যাপক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ভারত সম্পর্কে মানুষের যে উদারনৈতিক (লিবারেল) ধারণা ছিল, সেই ভারত কিন্তু পরিবর্তিত বলে আমরা মনে করি। এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যমেও বাংলাদেশ সম্পর্কে যেভাবে বলা হচ্ছে, সেটি বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিব্রতকরও। ভারতের জন্যও এ অবস্থা বিব্রতকর ও লজ্জাজনক। ভারত তার অবস্থান থেকে সরে আসবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

বিজ্ঞাপন

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ভারতের কার্যক্রম সম্পর্কে টিআইবি তার পর্যবেক্ষণে বলেছে—

  • সরকার পতনের পর শেখ হাসিনা ও অন্যান্য কয়েকজন রাজনীতিবিদের ভারতে আশ্রয় গ্রহণ, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়েছে;
  • নতুন সরকার বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করবে বলে ভারতের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ;
  • গণঅভ্যুত্থানে বহিঃশক্তির ভূমিকা ও কর্তৃত্ববাদী সরকারের (আওয়ামী লীগের) পক্ষের বয়ান প্রচার;
  • গৃহীত পদক্ষেপ— বাংলাদেশ সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি, ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন থেকে অপ্রয়োজনীয় কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া, বাংলাদেশে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেওয়া, ভিসা পরিষেবা সীমিত করা;
  • ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সাময়িকভাবে স্থবির, তবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার পর বাণিজ্য পুনরায় শুরু;
  • বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো;
  • বাংলাদেশের কড়া প্রতিবাদ সত্ত্বেও ‘সীমান্ত হত্যা’ চলমান’; এবং
  • গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী সরকার পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে ভারতের সরকার, রাজনীতিক ও গণমাধ্যমের ব্যর্থতা।

অর্থাৎ, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন মেনে নিতে ভারত ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করে টিআইবি।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসডব্লিউ

অন্তর্বর্তী সরকার টিআইবি ভারত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর