Sunday 29 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুন্নি হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪২ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ২২:১৩

দু’জন হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

চুয়াডাঙ্গা: জেলার হাজরাহাটি-বোয়ালমারী মাঠ থেকে উদ্ধারকরা ভাংবাড়ীয়া গ্রামের খালেদা আক্তার মুন্নি হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দু’জন হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দু’জন হত্যাকারী আদালতে বিজ্ঞ বিচারকের কাছে হত্যার ঘটনা বর্ণনা করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) রিয়াজুল ইসলাম জানান, ‘আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া গ্রামের মরহুম খোয়াজ আলী শেখের মেয়ে খালেদা আক্তার মুন্নি (১৮) গত শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে হাটবোয়ালিয়া বাজারে কেনাকাটা করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে সে তার মাকে মোবাইল ফোনে জানায়, কেনাকাটা করতে রাত হওয়ায় সে আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরে তার খালার বাসায় থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৮ টায় হাজরাহাটি-বোয়ালমারী মাঠ থেকে অজ্ঞাতনামা মহিলার অর্ধগলিত পোকা ধরা মরদেহ উদ্ধার করা হলে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহে বিভিন্ন জায়গায় ট্যাটু দেখে মুন্নির বলে সনাক্ত করে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে হত্যার শিকার মুন্নির মা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ১৪ নভেম্বর ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১১।

এরপর চুয়াডাঙ্গা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত আসামী পৌর এলাকার হাজরাহাটি শেখ পাড়ার টোকন আলীর ছেলে মানিক আলী ওরফে মানিক মুন্সী (২২) ও একই পাড়ার মইদুল ইসলামের ছেলে পারভেজ মুন্সী ওরফে স্বপনকে (১৯) তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মানিক আলী জানায়, ‘গত বুধবার (৬ নভেম্বর) সে ও তার বন্ধুরা মুন্নির সঙ্গে টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য নিয়ে আসলে মুন্নি স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদের ব্লাকমেইল করে ২০ হাজার টাকা আদায় করে। তারপর মানিক মুন্সী, মুন্নির ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। গত শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে মোবাইল ফোনকলের মাধ্যমে মানিক মুন্সীর সাথে মুন্নি সারারাত ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে সম্মত হয়। ওই দিন সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে মুন্নি সদর উপজেলার বোয়ালমারী নীলমনিগঞ্জ পিটিআই মোড়ে পৌঁছালে মানিক মুন্সী ও তার অপর সহযোগী আসামি পারভেজ মুন্সীকে মুন্নিকে নিয়ে আসতে বলে। পারভেজ মুন্সী পিটিআই মোড় থেকে তাকে নিয়ে বোয়ালমারী শ্বশানের রাস্তার ফাঁকা জায়গায় মানিক মুন্সীর নিকট নিয়ে যায়।’

জিজ্ঞাসাবাদে মানিক মুন্সী আরও বলেন, ‘তারা দু’জন পানবরজের পিছনের জঙ্গলে মুন্নির সঙ্গে পালাক্রমে শারীরিক সম্পর্ক করে। পারভেজ মুন্সী ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলেও সে একাধিকবার মুন্নির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। এরপর তাকে ৫ হাজার টাকা দিলে সে টাকা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করে এবং চিৎকার করত থাকে। সে সময় মুন্নির গলা চেপে ধরলে সে উপুড় হয়ে পড়ে যায়। এরপর মানিক মুন্সী তার পিঠের উপর বসে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করার পর ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে জঙ্গলের ফেলে রেখে চলে যায়। তারপর মুন্নির শপিং ব্যাগ ও জুতা নদীতে ফেলে দেয়।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ‘ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আসামি দু’জন আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। পরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

সারাবাংলা/এইচআই

খুনের রহস্য গ্রেফতার চুয়াডাঙ্গা ধর্ষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর