Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চীনা অর্থায়নে দক্ষিণ অ্যামেরিকায় প্রথম সমুদ্রবন্দর উদ্বোধন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:২৭ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৪৩

পেরুর চাঙ্কাই বন্দর তৈরি হয়েছে চীনের অর্থায়নে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অংশ হিসেবে তৈরি এই বন্দরটি লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

পেরুর চাঙ্কাই বন্দরের উদ্বোধন করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এটি দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে চীনের অর্থায়নে তৈরি প্রথম কোনো সমুদ্রবন্দর।

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অংশ হিসেবে তৈরি এই বন্দরটি লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার পেরুর চাঙ্কাই বন্দরটি উদ্বোধন করেন জিনপিং। এ সময় তিনি একে ‘একবিংশ শতাব্দীর সামুদ্রিক সিল্ক রোড’ হিসেবে অভিহিত করেন। বলেন, ‘এটি পেরুর জন্য উল্লেখযোগ্য আয় ও বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।’

পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্ত চীনের সঙ্গে এই সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এই প্রকল্প আমাদের অর্থনীতির উন্নয়নে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতিফলন৷।’

শি স্থানীয় এল পেরুয়ানো পত্রিকায় প্রকাশিত একটি মতামত নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, এই প্রকল্পটি বছরে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগ তৈরি করবে এবং আট হাজারের বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করবে। পাশাপাশি পেরু-চীন রুটের লজিস্টিক খরচ ২০ শতাংশ কমিয়ে দেবে।

বোলুয়ার্ত বন্দরের সুযোগকে স্বাগত জানিয়ে চীনের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির উন্নয়নে চীন একটি বড় ভূমিকা পালন করছে।’

পেরুর লিমায় দেশটি প্রেসিডেন্ট দিনা বেলুয়ার্তের উপস্থিতিতে বন্দরটি উদ্বোধন করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি: এপি

১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পটি পরিচালনা করছে চীনের বৃহৎ শিপিং কোম্পানি কস্কো। ২০২৫ সালের মধ্যে চাঙ্কাই বন্দর বিশ্বের সবচেয়ে বড় কনটেইনার জাহাজগুলোর হ্যান্ডলিং ক্ষমতা অর্জন করবে। এটি ব্রাজিলসহ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে সয়াবিন ও লোহার আকরিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য রফতানি সহজতর করবে। প্রথম জাহাজটি আগামী সপ্তাহে চাঙ্কাই বন্দর থেকে যাত্রা করবে, যা দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়ার বাণিজ্য রুটের খরচ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে প্রকল্পটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। স্থানীয় মৎস্যজীবী ও বাসিন্দারা পরিবেশগত ক্ষতি ও ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার স্থান হারিয়ে ফেলার অভিযোগ তুলেছেন। ৭৮ বছর বয়সি জেলে জুলিয়াস সিজার বলেন, ‘আমাদের মাছ ধরার স্থানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি চীনাদের দোষ দিই না, বরং আমাদের সরকারই আমাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ।’

এর আগে মার্কিন সেনা কমান্ডের সাবেক প্রধান জেনারেল লরা রিচার্ডসন সতর্ক করেছিলেন, চাঙ্কাই বন্দরটি চীনের নৌ বাহিনীর গোয়েন্দা কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার হতে পারে। লাতিন আমেরিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক ব্রায়ান নিকোলসও লিমায় সতর্ক করেছিলেন, চীনের বিনিয়োগ সম্পর্কে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সতর্ক থাকা উচিত।

চাঙ্কাই বন্দর দক্ষিণ আমেরিকায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও পেরুর মতো দেশগুলোর জন্য প্রধান বাণিজ্য অংশীদার হয়ে ওঠার উদাহরণ। চীনের রাষ্ট্রীয় গ্লোবাল টাইমস একটি সম্পাদকীয়তে লিখেছে, এই বন্দর চীন ও লাতিন আমেরিকার মধ্যে বাস্তব সহযোগিতার সেতু এবং এটি কোনোভাবেই ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার হাতিয়ার নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘সামরিক ব্যবহারের অভিযোগ’কে ‘মিথ্যা প্রচারণা’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে।

সারাবাংলা/টিআর

চাঙ্কাই বন্দর চীন পেরু বিআরআই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর