কাকরাইল মসজিদে অবস্থান নিলেন সাদপন্থিরা, সড়কেও লাখো মুসল্লি
১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৩৯ | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:০৮
ঢাকা: তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভি ও মওলানা জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই কাকরাইল মসজিদে অবস্থান নিয়েছেন সাদপন্থিরা।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৮টার পর কাকরাইল মসজিদে প্রবেশ করেন সাদপন্থিরা। এ সময় মসজিদের বাইরে কাকরাইল এলাকায় লক্ষাধিক লোকের জমায়েত হয়। কাকরাইলে আশপাশের সব সড়ক বন্ধ করে কয়েক লাখ মুসল্লি বসে পড়েন।
পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে পৌনে ১টার দিকে দোয়া পরিচালনা করেন মওলানা মোশারফ। নামাজের খুতবার আগে তিনিই বয়ান দেন।
তাবলিগ জামাতের বিবদমান দ্বন্দ্বের পর থেকে গত সাত বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে জুবায়েরপন্থিরা চার সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থাতেই এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিল সাদপন্থিরা।
গত ৪ নভেম্বর সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা দুই দফায় আয়োজিত হবে। প্রথম দফার ইজতেমা শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি, চলবে ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফার ইজতেমা হবে ৭, ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি।
তবে গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে জুবায়েরপন্থিদের সমর্থক ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের সম্মেলন থেকে জুবায়েরপন্থিরা টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে ১৫ নভেম্বর থেকে অবস্থান নেবেন বলে ঘোষণা দেন। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়।
এর মধ্যে গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর ইজতেমা কেন্দ্রিক সাদপন্থিদের কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা না দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) পালটা সংবাদ সম্মেলনে সাদপন্থিরা বলেন, কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থিরা সারা বছর মাদরাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন। সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে দুপক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসনের আহ্বান জানান। আলেম-ওলামারা এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করে আগের মতো কাকরাইল মসজিদ, বিশ্ব ইজতেমা ও সারা দেশে আলাদা আলাদা কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংঘাত হবে না বলে মন্তব্য করেন তারা।
বুধবার রাতেই ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘কাকরাইল মসজিদ ও তাবলিগ বিষয়ে জরুরি বিবৃতি’তে জানানো হয়, মঙ্গলবার সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের নেতাদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, ধর্ম উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যৌথভাবে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে তাবলিগের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের বিষয়ে আগের নিয়ম মেনে নিয়ে বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে দুই পক্ষ ঐকমত্য পোষণ করেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর
কাকরাইল মসজিদ জুবায়েরপন্থি বিশ্ব ইজতেমা মওলানা জুবায়ের মওলানা সাদ সাদপন্থি