Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে দুদিন ধরে ডিমের আড়ত বন্ধ, ব্যবসায়ীরা ‘লাপাত্তা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:০৯ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৫৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে দুদিন ধরে আড়তে তালা দিয়ে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।শুরুর দিনে আড়ত বন্ধ রাখলেও ব্যবসায়ীদের বাজারে দেখা গিয়েছিল।

দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) নগরীর পাহাড়তলী ও স্টেশন রোডে বন্ধ আড়তে ব্যবসায়ীদের আর দেখা মিলছে না। আড়তদারদের মধ্যে নেতৃস্থানীয়দের মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

তবে কিছু কিছু আড়তে কর্মচারিদের দেখা গেলেও তারা ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।

জানা গেছে, সরকারি দামে ডিম কেনা-বেচা করতে না পারার অজুহাত দেখিয়ে তারা আড়ত বন্ধ রেখেছেন। এ অবস্থায় প্রশাসনের অভিযান এড়াতে আড়তদাররা লাপাত্তা হয়ে গেছেন।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ব্রয়লার মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদফতর। এতে উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দর নির্ধারণ করা হয়।

এ হিসেবে খুচরা পর্যায়ে এক ডজন ডিমের দাম হয় ১৪২ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে এখন ১৭০-১৮০ টাকায় ডিম বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পাইকারি বাজার বা আড়ত থেকেই তাদের ডিম কিনতে হচ্ছে ডজনপ্রতি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। এ অবস্থায় তাদের ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি ছাড়া উপায়।

আড়তে দাম বাড়তি কেন, এর জবাবে পাহাড়তলী ডিম আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর লিটন বলেন, ‘উৎপাদন পর্যায়ে সরকারি দর হচ্ছে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা। আমাদের জন্য সরকার নির্ধারিত দাম ১১ টাকা ০১ পয়সা। আর খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৬ পয়সা বেঁধে দেয় সরকার। কিন্তু বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমাদের ডিম কিনতে হচ্ছে ১২ টাকা ৮০ পয়সা দরে।’

বিজ্ঞাপন

বেশি দামে ডিম কিনে বেশি দামে বেচতে গিয়ে জরিমানা ও হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে, এজন্য আড়তে ডিম বিক্রি বন্ধ রাখার কথা বলেছিলেন লিটন। তবে সোমবার রাত থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

ডিমের বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনাকারী জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আড়তদারেরা উৎপাদক পর্যায় থেকে ডিম কেনার সময়ও কোনো মূল্যরশিদ সংরক্ষণ করেন না, খুচরা পর্যায়ে বিক্রির সময়ও রশিদ দেন না। গত ১৫ দিনে ডিমের বাজার পর্যবেক্ষণে কর্মকর্তারা তথ্য পান, কিছু আড়তদার সংঘবদ্ধভাবে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে প্রতিটি ডিমের ওপর ১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে বিক্রি করেছেন। এর প্রভাবে খুচরা বাজারে ডিমের দাম অস্থির হয়ে ওঠে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী বাজার ও স্টেশন রোডে শতাধিক ডিমের আড়ত আছে। এসব আড়তে লাখখানেক ডিম মজুত আছে। কিন্তু গত দু’দিন ধরে আড়তদারেরা ডিম বিক্রি করেননি। অধিকাংশ আড়তই তালাবদ্ধ আছে। কিছু আড়তে ভেতরে কর্মচারিদের দেখা গেছে।

আড়ত থেকে বিক্রি বন্ধ থাকায় খুচরা বাজারে ডিমের সংকট তৈরি হতে শুরু করেছে।

নগরীর মোমিন রোডের রাজিব স্টোরের মালিক রিপু নাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুইদিন ধরে পাইকাররা ডিম সাপ্লাই দিচ্ছে না। আমাদের কাছে যা আছে, সেগুলো বিক্রি করছি। ১৭৫ খেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছি। সাপ্লাই শুরু হলে ডিমের দাম কমবে।’

বাজারে ডিমের সংকটকে কৃত্রিম উল্লেখ করে দাম বৃদ্ধির জন্য আড়তদার-পাইকারি ব্যবসায়ীদের দূষছেন এ খুচরা বিক্রেতা।

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

ডিম ডিম ব্যবসায়ী ডিমের আড়ত