বছরের একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু, আক্রান্ত ১০১৭
২ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৬ | আপডেট: ৩ অক্টোবর ২০২৪ ০০:৫৭
ঢাকা: মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে থেকে বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও আট জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর একদিনে এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যুর তথ্য। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সারাদেশে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মারা গেলেন ১৭৪ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও এক হাজার ১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
দেশে চলতি বছরের ২ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৯ জন। এর মাঝে ২৯ হাজার ৪৭৫ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
বুধবার (২ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বিগত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত এক হাজার ১৭ জনের মাঝে পুরুষ ৬৫১ জন ও নারী ৩৬৬ জন। এর মাঝে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩৯১ জন নতুনভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। দুই সিটি করপোরেশনের বাইরে ঢাকা বিভাগের অন্যান্য এলাকায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় ২১৬ জন রোগী নতুনভাবে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।
বিগত ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৯২ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন, রংপুর বিভাগে ৩১ জন, বরিশাল বিভাগে ৭৬ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিগত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সিলেট বিভাগে বিগত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন চার জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের ২ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৯ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ নারী। চলতি বছর এ যাবত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ১৭৪ জন। এর মাঝে ৫১ দশমিক ১ শতাংশ নারী ও ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ।
বর্তমানে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তিন হাজার ৪৫০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর যে ঊর্ধ্বমুখী চিত্র দেখা যায়, সেটার ধারাবাহিকতা বজায় ছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতেও। মোট এক হাজার ৫৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী জানুয়ারি মাসে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। এর মাঝে ১৪ জন মারা যান।
তবে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই সংখ্যা কমে আসতে থাকে। এই মাসে ৩৩৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর মাঝে তিন জন মারা যান। মার্চে দেশে ৩১১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। যার মধ্যে পাঁচ জন মারা যাওয়ার তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এপ্রিলে ৫০৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়, যার মাঝে দুই জন মারা যান। মে মাসে ৬৪৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মাঝে মারা গেছেন ১২ জন।
জুনে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭৯৮ জন চিকিৎসা নেন। এর মাঝে আটজন মারা যান। তবে জুলাই মাসে জুনের তুলনায় ৩ দশমিক ৩৪ গুণ বেশি বা দুই হাজার ৬৬৯ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এদের মধ্যে মারা যান ১২ জন। সেই হিসাব ছাড়িয়ে যায় আগস্টের পরিসংখ্যানে। এই মাসটিতে জুলাইয়ের তুলনায় ২ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি বা ছয় হাজার ৫২১ জন রোগী শনাক্ত হয়। যার মধ্যে মারা গেছেন ২৭ জন।
তবে চলতি বছরের সবচাইতে ভয়ংকর মাস ছিল সেপ্টেম্বর। এই মাসে আগস্টের তুলনায় তিন গুণ বেশি রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এই মাসে ১৮ হাজার ৯৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মাঝে ৮০ জন মারা গেছেন।
অর্থাৎ পরিসংখ্যান বিবেচনায়, দেশে শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর মাসে আগস্টের তুলনায় ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। একইভাবে আগস্টের তুলনায় ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি রোগী মারা গেছে সেপ্টেম্বরে।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম