৭০ জঙ্গিসহ ৯০০ বন্দি পলাতক: আইজি প্রিজন্স
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৯ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:১৫
ঢাকা: ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে কয়েদি ও বন্দিরা পালিয়ে গেছেন। কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন জানিয়েছেন, ৭০ জন জঙ্গিসহ ৯০০ জন বন্দি এখনো পলাতক।
তিনি বলেন, কারাগারের বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দুই হাজারের বেশি বন্দী পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পাওয়া বন্দিসহ বিচারাধীন মামলার আসামিরাও আছেন। এখন পর্যন্ত ৯০০ বন্দি পলাতক রয়েছে, তাদের মধ্যে ৭০ জন জঙ্গি। এ ছাড়া শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ ৪৩ জন বন্দি জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছেন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বকশীবাজারে অবস্থিত কারা অধিদফতরে কারা নিরাপত্তায় গৃহীত বিভিন্ন ব্যবস্থা সম্পর্কিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইজি প্রিজন্স বলেন, ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সময় সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক অবকাঠামো ক্ষতি হয়। বাংলাদেশের কারা অধিদফতরও ছাড় পায়নি। বেশ কয়েকটি কারাগারে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এবং দুই হাজারের বেশি বন্দি কারাগার থেকে পালিয়ে যায়। এরপর অনেক বন্দিকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেক আসামি ফিরেও এসেছে। এখন পর্যন্ত ৯০০ বন্দি পলাতক।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, কয়েকটি কারাগারে গোলাবারুদ লুটের ঘটনাও ঘটেছে। কয়েকটি কারাগারে বন্দি পালানোর সময় কয়েকজন বন্দির মৃত্যুসহ অনেক কারা কর্মকর্তা ও কারারক্ষী গুরুতর আহত হন। অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুরের ফলে দুটি কারাগারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। অনেক কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসস্থলও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কারা মহাপরিদর্শক আরও বলেন, এর মধ্যে কিছু বন্দি স্বেচ্ছায় এবং বাকিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চলমান। এরই মধ্যে কারাগার থেকে লুট করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের উল্লেখ্যযোগ্য অংশও উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিগুলো উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
কারাগারকে সেবাগ্রহণকারীদের আস্থাভাজন হিসেবে গড়ে তোলাসহ একটি প্রকৃত সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যের কথা জানান কারা মহাপরিদর্শক। বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণসহ যোগ্যতার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পদায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে স্থবির পদোন্নতির ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনাসহ জনবল বাড়ানোর মতো ন্যায্য দাবির বিষয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানান আইজি প্রিজন্স। কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কারাবন্দিদের বিরুদ্ধে মাদকের বিষয়ে ব্যাপক অভিযোগ মিলছে বলেও জানান তিনি। তবে কারারক্ষীরা বিভিন্ন কারাগারে যেসব দাবি তুলেছিলেন, সেগুলো যৌক্তিক বিবেচনায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবিরসহ কারা অধিদফতরের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
সারাবাংলা/টিআর