সীমান্তে হত্যা ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:৩৪ | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:২৫
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: সম্প্রতি মৌলভীবাজারের লালার চর সীমান্তে স্বর্ণা দাসকে হত্যা ও বিগত দিনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড়ে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘বুক পেতেছি গুলি কর, বুকের ভেতর দারুণ ঝড়’, ‘ভারতীয় পণ্য, বয়কট বয়কট’, ‘সীমান্তে হত্যা হলে, সেভেন সিস্টার্স থাকবে না রে’, ‘সীমান্তে হত্যা কেনো, বিচার চাই বিচার চাই’, ‘ফেলানীর রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘সম্প্রতি দেশ থেকে বিতাড়িত স্বৈরশাসক জনগণের ক্রান্তিকালে জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। ফলে তারা সেই ফল ভোগ করেছে। আমি বর্তমান সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই, ভারতীয় যারা প্রতিনিধি আছে তাদের অবিলম্বে ডেকে এর প্রতিবাদ জানানো উচিত। সেইসঙ্গে আগের সরকার যেমন নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছে, আপনারা তেমন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করবেন না। আপনারা ভারতকে স্পষ্ট বার্তা দিন, যাতে তারা যেন এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করে। ভারতের জানা উচিত, প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে অশান্তিতে রেখে কোনো দেশ শান্তিতে থাকতে পারে না। সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। আন্তর্জাতিক আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত।’
আরবি বিভাগের অধ্যাপক মো. ইফতেখার আলম মাসুদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি ভারত নামক সাম্প্রদায়িক এবং অসভ্য রাষ্ট্রের অসভ্যতা। পৃথিবীতে অনেক রাষ্ট্র আছে। বড় রাষ্ট্রের পাশে ছোট রাষ্ট্র আছে। দুর্বল রাষ্ট্রের পাশে শক্তিশালী রাষ্ট্র আছে। কিন্তু সীমান্তে এভাবে মানুষ হত্যা করে এরকম ভারতের মতো অসভ্য রাষ্ট্র পৃথিবীর কোথাও নেই। ফেলানি হত্যা, গতকাল স্বর্ণা দাসকে হত্যার মতো অসংখ্য হত্যাযজ্ঞ তারা চালিয়েছে। আগে বাংলাদেশের সীমান্তে এই পরিস্থিতি ছিল না, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এই সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। সম্প্রতি দেশ থেকে বিতাড়িত নিকৃষ্ট ফ্যাসিস্টকে তারা আশ্রয় দিয়েছে। কিছুদিন আগে আমাদের পৃথিবীর জঘন্যতম বন্যা উপহার দিয়েছে। তাই আমরা বর্তমান সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই ভারতের এই নগ্ন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করুন। ভারতীয় দূতাবাসের এর প্রতিবাদ জানান।’
ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রোকৌশল বিভাগের ২০২১-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, ‘ভারতকে আমরা বন্ধুরাষ্ট্র বলতে পারি না। কারণ বন্ধুত্ব হয় সমতার ভিত্তিতে। বাংলাদেশের ওপর ভারতের শোষণ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসতেছে। খুনি মোদি আর খুনি হাসিনার মধ্যে যে অসম চুক্তি হয়েছে, আমরা এ চুক্তি মানি না। বাংলাদেশের ফেনী ও নোয়াখালীতে যে বন্যা হয়েছে এর জন্যে দায়ী হাসিনা সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি। আমরা পাকিস্তানের যে জিঞ্জির ছিঁড়েছি তা ভারতের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নয়। আমরা বর্তমান সরকারকে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করছি।’
প্রতিবাদ সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মারুফ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/পিটিএম