৯ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন নয়, সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম বন্দরের
১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৫ | আপডেট: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: তারল্য সংকটে পড়া ৯টি ব্যাংকের সঙ্গে নতুন করে কোনো লেনদেন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে সেবাগ্রহীতা কেউ এসব ব্যাংকের চেক, পে-অর্ডার ও ব্যাংক গ্যারান্টি দিলে সেগুলো গ্রহণ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বন্দর।
৯টি ব্যাংক হল- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংক।
এসব ব্যাংকের মধ্যে প্রথম ছয়টি ব্যাংক সরাসরি শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে কয়েকটিকে বিতর্কিত গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণমুক্ত করেছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আমাদের (বন্দর কর্তৃপক্ষ) এক ধরনের সম্পর্ক আছে। সেখানে আমাদের স্থায়ী আমানত আছে। সেটা নিয়ে একটা জটিলতা আছে, যেটা আমরা সুরাহা করার চেষ্টা করছি। এর মধ্যে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট চলছে। এজন্য সেই ব্যাংকগুলোর চেক কিংবা পে-অর্ডার যদি সেবাপ্রত্যাশী কেউ দেন এবং সেগুলো যদি আমরা ব্যাংকে জমা দিই, তাহলে আমরা টাকা পাচ্ছি না।’
‘এতে নানাভাবে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। কার্যক্রমে নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এজন্য আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ সকল বিভাগকে বলেছি, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব ব্যাংকের চেক, পে-অর্ডার ও ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য,’ – বলেন বন্দর সচিব।
সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৯টি ব্যাংকের মধ্যে ৪টিতে বন্দর কর্তৃপক্ষের ৯২৭ কোটি টাকা স্থায়ী আমানত আছে। পদ্মা ব্যাংকে আছে ১৮০ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব আমানত সুদসমেত ফেরত চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয়। তবে তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো আমানত ফেরত দিতে পারছে না। কিস্তি আকারে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বন্দরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সেবার বিপরীতে মাশুল বা চার্জ হিসেবে ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের চেক, পে-অর্ডার ও ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ না করার জন্য অভ্যন্তরীণ সব বিভাগীয় প্রধান, উপ-প্রধান ও শাখাপ্রধানকে লিখিত নির্দেশনা দেন বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মেহাম্মদ আবদুস শাকুর।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে। এসব ব্যাংকের নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে, যার মধ্য দিয়ে ব্যাংকগুলো এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এমও