সহজ শর্তে ঋণসহ নীতি সহায়তা চায় বিজিএমইএ
২৭ আগস্ট ২০২৪ ২০:০৬ | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৪ ০৩:৩০
ঢাকা: পোশাক শিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এক মাসের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, ঋণ পরিশোধের কিস্তি ৬ মাস ও পরবর্তী ৩ মাস ইউটিলিটি সংযোগ বিছিন্ন না করাসহ বিভিন্ন নীতি সহায়তা চেয়েছে বিজিএমইএ।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) আগারগাঁওয়ে ইআরডি কার্যালয়ে বিজিএমইএ এর নতুন সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ সহায়তা চাওয়া হয়।
বিজিএমইএ এর প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, সাবেক সভাপতি এস. এম. ফজলুল হক, বিজিএমইএ বোর্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব , সহ-সভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি মিরান আলী, সহ-সভাপতি আসিফ আশরাফ ও সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী।
সাক্ষাৎকালে বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম পোশাক শিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বৃহৎ বাজারগুলো, ইউরোপিয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানিতে নিম্নমুখী প্রবণতা, গত ৫ বছরে বিভিন্ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির ফলে শিল্পে সামগ্রিকভাবে উৎপাদন ব্যয় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া এবং শিল্পে পর্যাপ্ত গ্যাস ও বিদ্যেৎ সরবরাহ না থাকার কারণে ক্রেতাদের উদ্বেগগুলো তুলে ধরেন।
বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল এই সংকটময় সময়ে শিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা এবং ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধির জন্য সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করার জন্য শিল্পে কিছু নীতি সহায়তা প্রদানের বিষয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান।
বিজিএমইএ’র সুপারিশগুলো হলো- নগদ প্রবাহ সহায়তা হিসেবে ১ মাসের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদান। আগে ৬টি লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে ঋণ খেলাপি হতো, পরে এটি পরিবর্তন করে ৩ কিস্তিতে নামিয়ে আনা হয়। ঋণ পরিশোধের কিস্তি সংখ্যা আবারও ৩ থেকে বাড়িয়ে পূর্বের ন্যয় ৬ করা। শিল্পকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য পরবর্তী ৩ মাসের জন্য ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করা। ব্যাংক খাতের সংস্কারকে সামনে রেখে কারখানাগুলোকে বিশেষ সুরক্ষা প্রদান। স্বতন্ত্র ব্যক্তির বিরুদ্ধে নেওয়া কর্মকাণ্ড থেকে ব্যবসাকে রক্ষা করা। শিল্পকে ব্যবসাবান্ধব করতে শিল্পের জন্য যথাযথ নীতি সহায়তা প্রণয়নের বিষয়ে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক সমন্বয়ে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন। শিল্পে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের নিশ্চয়তা এবং বিদ্যুতের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ এবং টেক্সটাইল বর্জ্য অপসারণকে বাইরের প্রভাবমূক্ত রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।
সাক্ষাৎকালে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ইআরডি’তে বিজিএমইএ এর নতুন সভাপতি ও তার নেতৃত্বাধীন বোর্ডর সহ-সভাপতিগনকে স্বাগত জানান। তিনি বিজিএমইএ এর নেতাদেরকে পোশাক শিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানের ওপর নজর দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। একইসঙ্গে সামগ্রিকভাবে কিভাবে পোশাকে মূল্য সংযোজন আরও বাড়ানো যেতে পারে, সে ব্যাপারে আরও উদ্যোগী হয়ে কাজ করার জন্য প্রতিনিধিদলটিকে বলেন।
তিনি শ্রম সংক্রান্ত ইস্যুগুলো বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ন, মজুরি এবং এ খাতে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো এবং শ্রমিক অধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে যে ডিউ ডিলিজেন্সগুলো আসতে পারে, সেই ব্যাপারগুলোতে সজাগ থাকার জন্যও বিজিএমইএ নেতাকে পরামর্শ দেন।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ দারিদ্র বিমোচন, নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জাতীয় অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পের অনবদ্য অবদানের উল্লেখ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার শিল্পকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদান করবে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে