ফের বন্যা, মারিশ্যা-বাঘাইহাট সড়কের ৩ স্থানে পাহাড় ধস
২১ আগস্ট ২০২৪ ২২:০২ | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪ ০৯:৩৬
রাঙ্গমাটি: টানা এক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টিপাতে কাচালং নদের পানি বেড়ে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বাঘাইছড়ি উপজেলা। উপজেলার বাঘাইছড়ি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এ নিয়ে এ বছর চতুর্থবারের মতো বন্যায় আক্রান্ত হলো এই উপজেলা।
বন্যা ও অব্যাহত বৃষ্টিপাতের মধ্যেই বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা-বাঘাইহাট সড়কের অন্তত তিনটি স্থানে পৃথকভাবে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সহায়তায় পাঁচ ঘণ্টা পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি দীঘিনালা উপজেলার কবাখালী অংশে ডুবে যাওয়া সড়কের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে সাজেকসহ বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার সঙ্গে সারা দেশের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়া আড়াই শতাধিক পর্যটক এখনো সাজেক ছাড়তে পারেননি।
আরও পড়ুন- শতাধিক গ্রাম প্লাবিত, খাগড়াছড়িতে পানিবন্দি ১০ হাজার পরিবার
বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে বাঘাইছড়ির মারিশ্যা-বাঘাইহাট কর তিনটি স্থান চারকিলো, নয়কিলো ও চৌদ্দকিলো এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) খাগড়াছড়ি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, বুধবার সকালে বাঘাইছড়ির মারিশ্যা সড়কে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের সড়ক বিভাগের লোকজন পাঁচ ঘণ্টা ধরে সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে যান চলাচল সচল করেছে। তবে দীঘিনালার কবাখালী সড়কের অংশ এখনো পানিতে ডুবে রয়েছে। ওই সড়কে যান চলছে না।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার থেকে বাঘাইছড়ি উপজেলার মাচালং নদীর পানি বাড়তে থাকলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করে। উপজেলা সদর থেকে শুনরু করে বারোবিন্দু ঘাট, মাস্টারপাড়া, লাইন্যাঘোনা, এফ ব্লক, পশ্চিম মুসলিম ব্লক, রূপকারী, পুরাতন মারিশ্যা, খেদারমারাসহ বাঘাইছড়ি ও আটটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বন্যা পরস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে খোলা হয়েছে ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় ইউনিয়নগুলোর পরিস্থিতি জানাতে পারছে না উপজেলা প্রশাসন।
বাঘাইছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীণ আক্তার বলেন, বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। পানিবন্দি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে। উপজেলায় প্রশাসন থেকে ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমতো না থাকায় ইউনিয়নগুলোর পরিস্থিতি সঠিকভাবে জানতে পারছি না।
সাজেকের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ইউএনও বলেন, দীঘিনালার কবাখালী অংশের সড়ক ডুবে যাওয়ায় ও কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসের কারণে সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেখানে আনুমানিক আড়াই শ পর্যটক আটকে পড়েছেন।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় পুরো জেলায় মোট ২৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, আবহাওয়া অধিদফতরের অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাসে রাঙ্গামাটিতেও পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসাবসকারীদের ক্ষতি এড়াতে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শহরজুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলা ও উপজেলাসহ মোট ২৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সারাবাংলা/টিআর