Sunday 05 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ইসলামী ও ন্যাশনাল ব্যাংক লুটকারীদের শাস্তি দিতে হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ আগস্ট ২০২৪ ১৬:১৯ | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৪ ১৭:৫৪

ঢাকা: ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকে লুট হয়েছে মন্তব্য করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘যারা লুট করেছে তাদের শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরবে না।’

তিনি বলেন, ‘বড় বড় কোম্পানির মালিকরা এ লুটপাট করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কিভাবে পারলো ব্যাংক দখল করার সুযোগ দিতে? ব্যাংকে বড় ঋণ কেলেঙ্কারি কিভাবে হয়। এটা দেখার দায়িত্ব তো তাদের।’

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর পল্টনে পুঁজিবাজারভিত্তিক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস’ ফোরাম (সিএমজেএফ)-এর এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠনের সভাপতি গোলাম সামদানীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন, সিএমজেএফের সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান, সিএমজেএফ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন রেজওয়ান, সাবেক অর্থ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ, আব্দুল হাকিম প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আবু আহমেদ বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারেনি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফান্ড ম্যানেজার টাকা পয়সা নিয়ে ভেগে যায় কিভাবে? এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাই বড় দায়ী। মিউচুয়াল ফান্ড ও পুঁজিবাজারকে ক্ষতি করার পেছনে বড় দায় বিএসইসির।’

পুঁজিবাজারের আরেকটি বড় দুর্নীতির উৎস হচ্ছে তালিকাভুক্তির আগে প্লেসমেন্ট শেয়ার বাণিজ্য মন্তব্য করে আবু আহমেদ বলেন, ‘প্লেসমেন্ট শেয়ার আরেকটি বড় দুর্নীতির জায়গা। এটা নিয়েও রেগুলেটর কাজ করতে পারেনি। ভালো আইপিও আসছে না, আনার চেষ্টাও করা হয়নি। ইনটেনসিভ না থাকলে ভালো কোম্পানি এখানে আসবে কেন? এখানে ভালো কোম্পানি আনতে হলে কোম্পানিকে ভালো কিছু সুবিধা দিতে হবে। এই সুযোগটাও এতদিনে ব্যবস্থা করতে পারেনি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।’ এ কারণে ৩৩ লাখ বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব এখন ১৩ লাখে নেমে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন ড. মোহাম্মদ ইউনূস। তার নেতৃত্বে অর্থনীতির উন্নয়ন সকলের জন্য হবে আশবাদ ব্যক্ত করে আবু আহমেদ বলেন, ‘এই সরকার সবার সরকার। এতদিন অনেক কথাই বলতে পারিনি। এখনতো কথা বলা যাচ্ছে, আমাদের উচিত সরকারকে দেশ ও অর্থনীতির জন্য সহযোগিতা করা।’

দেশের পুঁজিবাজার সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগকারীদের আস্থায় আনতে বিশেষ ছাড় বা প্রণোদনা দিয়ে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্তির পরামর্শ দিয়ে আবু আহমেদ বলেন, ‘বিদেশি ও দেশের বড় কোম্পানিকে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের পারসু করতে হবে। সিস্টেমকে ইনসেনটিভ দেয়া লাগবে, নইলে তারা আসবে না।’

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, ‘ঋণ নির্ভর অর্থনীতি কখনোই শক্তিশালী হতে পারে না। শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া ও সবশেষ পাকিস্তান তার বড়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির শক্তি হলো আমরা। ভেতর থেকেই আমাদের শক্ত হতে হবে। বিদেশি কোনো ঋণে নয়, আমাদের অর্থনীতি আমাদেরকে ঠিক করতে হবে।’

সামষ্টিক অর্থনীতি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ, সুদহার ও বিনিময় হার নির্ধারণ সবকিছুই করতে হয় অন্যান্য দেশের অর্থনীতির দিকে খেয়াল রেখে।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ডিবিএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ‘পুঁজিবাজারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো যা লেখা হচ্ছে তা বস্তুনিষ্ঠ কি না। বেশি লেখার দরকার নেই, যতটুকু লেখা হচ্ছে তা যেনো বস্তুনিষ্ঠ হয়, এটাই মুখ্য। মানুষকে সঠিক তথ্য জানানোর দায়িত্বটি তো আপনাদেরই।’

সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী বলেন, ‘আমরা একটা সুস্থ ও দুর্নীতিমুক্ত পুঁজিবাজার চাই। যে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। আর সেটা করতে হলে পুঁজিবাজারে যারা দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম দুর্নীতি করছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলী বলেন, ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা সহজ নয়। এখানে শব্দ চয়ন ও তার বিশ্লেষণ খানিকটা জটিল ও দুর্বোধ্য হয়ে থাকে। পাঠক ও টেলিভিশন চ্যনেলের দর্শকের কাছে সহজভাবে উপস্থাপন করতে জানতে হয় অনেক। এজন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে সংগঠনের সদস্যদের জন্য।’

সারাবাংলা/জিএস/এনইউ

টপ নিউজ সিএমজেএফ

বিজ্ঞাপন

চলে গেলেন প্রবীর মিত্র
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর