রাজধানীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থী-জনতা
৭ আগস্ট ২০২৪ ২৩:১৯ | আপডেট: ৭ আগস্ট ২০২৪ ২৩:৪২
ঢাকা: শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা গণআন্দোলনের জের ধরে সরকারের পদত্যাগের পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাত। এরই মধ্যে অফিস-আদালত খুলে গেলে মানুষের ভিড় বেড়েছে সড়কে, বেড়েছে যানবাহনের ভিড়ও। তবে রাজধানীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাও অচল হয়ে পড়ায় তৈরি হয় ভোগান্তির শঙ্কা।
এ পরিস্থিতিতে পুলিশের অনুপস্থিতিতে আনসার বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য। তবে ঢাকার সব এলাকায় তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ছে না। বরং বিভিন্ন স্থানেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সড়কের আভ্যন্তরীণ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে হাত লাগিয়েছে আন্দোলনের সমর্থক ছাত্র-জনতা। দুই দিন ধরে রাজধানী ঘুরে তাদেরই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সব স্থানে সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর বাড্ডা, গুলশান, নিকেতন, তেজগাঁও, নাবিস্কো, বিজয় সরণি, সাত রাস্তা, মগবাজার, কাকরাইল, সেগুনবাগিচা ইত্যাদি এলাকায় মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। হাতে লাঠি নিয়ে তারা যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছিলেন।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আইডি কার্ড গলায় ঝুলানো শিক্ষার্থী ছাড়াও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দয়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে বিএনসিসি ও গার্লস স্কাউটসকে। ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মীসহ অন্য তরুণরাও। লেন মেনে যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করার পাশাপাশি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ না করা এবং সিগন্যাল মেনে চলার নির্দেশনাও দিচ্ছিলেন তারা।
সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা এই ব্যবস্থাকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তারা বলার আগেই ট্রাফিক আইন মানছেন। কেউ লেন ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে বাকিরা বাধা দিচ্ছেন। একে অন্যকে সিগন্যাল না ভাঙতে করতে উৎসাহ দিচ্ছেন।
শাহাবুল ইসলাম নামক একজন উবার চালক সারাবাংলাকে বলেন, ‘এভাবে নিয়মের মধ্যে চলতে পেরে ভালো লাগছে। এ রকম যদি সারা বছর সবাই নিয়ম মেনে চলত, তাহলে তো আরও ভালো লাগত।’ এভাবে সড়কে শৃঙ্খলা এনে শিক্ষার্থীরা দারুণ কাজ করছে মন্তব্য করেন তিনি।
রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় শিক্ষার্থী ও জনগণকে ট্রাফিক সামলাতে দেখা গেলেও অনেক স্থানেই আনসার সদস্যদেরও এ কাজে নিয়োজিত থাকতে দেখা গেছে বুধবার। আনসার সদস্যরা বলছেন, তারা তাদের মতো করে কাজ করছেন। শিক্ষার্থীরাও কাজ করলে সেটি তাদের জন্য সহায়ক হবে।
এদিকে দেশব্যাপী ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতিতে তরুণ শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় অনন্য নজির তৈরি করেছেন বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে দেশের ছাত্রসমাজের দায়িত্ব নেওয়ার বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার নগরীর পল্টন মোড়, জিপিও মোড়, গুলিস্তান মোড়, শাহবাগ মোড়, ফার্মগেট ও আসাদ গেট আড়ং মোড় এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষার্থী, স্কাউট সদস্য, আনসার সদস্য ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের মাঝে পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর
ছাত্র আন্দোলন টপ নিউজ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন