চট্টগ্রামে পথে পথে উল্লাস, আ.লীগ অফিস-নেতাদের বাসায় হামলা
৫ আগস্ট ২০২৪ ১৯:২২ | আপডেট: ৫ আগস্ট ২০২৪ ২৩:১৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর শোনার পর চট্টগ্রামে রাজপথে নেমে এসেছেন লাখো মানুষ। মিছিল-স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো নগরী। অন্যদিকে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসা ও প্রতিষ্ঠানে হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামলা হয়েছে নগরীর বেশ কয়েকটি থানাতেও।
সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল থেকে কার্যত চট্টগ্রাম নগরী ছাত্র-জনতার নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। বিভিন্ন স্থানে সেনাসদস্যদের জড়িয়ে ধরে জনতাকে উল্লাস করতে দেখা গেছে।
নগরীর কাজির দেউড়ির মোড়ে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল, রিকশা, ইজিবাইক ও ট্রাকে চড়ে মানুষ রাজপথ প্রদক্ষিণ করছে। কারও হাতে জাতীয় পতাকা, কেউ লাঠির মাথায় লাল কাপড় বেঁধে শূন্যে উঁচিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। অলিগলি থেকে শুরু করে মূল সড়কে কেবল মানুষ আর মানুষ। নগরীর নুর আহমদ সড়কে নগর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জনতাকে উল্লাস করতে দেখা গেছে।
নগরীর সল্টগোলা এলাকা থেকে সারাবাংলার স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইমরান চৌধুরী জানিয়েছেন, সল্টগোলা, বন্দর, ইপিজেড, কাটগড়, পতেঙ্গায় হাজার-হাজার মানুষ পথে নেমে এসেছে। এ সময় তাদের শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা গেছে। এসব এলাকায় কাউকে কাউকে মিষ্টি বিতরণ করতেও দেখা গেছে।
এ ছাড়া নগরীর দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, বায়েজিদ, জিইসি, আগ্রাবাদ, এ কে খান, কাজীর দেউড়ি, প্রবর্তকসহ আরও বিভিন্ন স্থানে জনতার মিছিলের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কার্যালয়, কোতোয়ালি থানা, পতেঙ্গা থানা, পাহাড়তলী থানা ও বিভিন্ন পুলিশ বক্সে হামলার ঘটনা ঘটেছে। নগরীর লালদিঘীর পাড়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, নিউমার্কেট এলাকায় দোস্ত বিল্ডিংয়ে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, দারুল ফজল মার্কেটে নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বাসাবাড়িতে হামলার খবর পাওয়া গেছে।
নগরীর বহদ্দারহাটে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ সময় পরিবারের সদস্যরা থাকলেও মেয়র বাসায় ছিলেন না। নগরীর পাথরঘাটায় রাউজানের সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর বাসাতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি, ম্যুরাল, নামফলক ভাঙচুর করা হয়েছে।
নগর বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. ইদ্রিস আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৫ বছরের দুঃশাসনের অবসানের পর উল্লসিত চট্টগ্রামের মানুষ স্বঃতস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসেছেন। জনতা রাজপথে বিজয় উদ্যাপন করছে। তবে কেউ যেন কোনো ধরনের নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড ও ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হতে না পারে, আমরা সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা নগর বিএনপির পক্ষ থেকে জনতাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সারাবাংলা/আরডি/টিআর