এই অভ্যুত্থানে প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণ চাইছি: সমন্বয়ক আসিফ
৩ আগস্ট ২০২৪ ১৪:২৭
ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের একজন আসিফ মাহমুদ বলেছেন, আপসহীনতার মূল্য যদি মৃত্যু হয়; তাতেও আমরা প্রস্তুত আছি। ছাত্র-নাগরিক এই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণ আহ্বান করছি।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১টায় সারাবাংলাকে আসিফ মাহমুদ এ সব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যখন আমরা ডিবি অফিসে ছিলাম, তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আন্দোলন স্থগিত করার কথা বলা হয়েছিল। এমনকি জোর করে আমাদের গণভবনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও ছিল। এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে আমরা ডিবি কার্যালয়ে অনশনে বসেছিলাম।’
সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদসহ ৬ জন ডিবি হেফাজতে ছিলেন। ১ আগস্ট ডিবি হেফাজতে থাকা ৬ সমন্বয়ককে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
৬ সমন্বয়ককে ডিবি থেকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, তারা (সমন্বয়করা) আমাদের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিল। এ ব্যাপারে জিডিও করা হয়েছিল। এখন তারা বলেছেন তাদের আর নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই, যখন তারা চলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, চলে যেতে আমরা কোনো বাধা দিইনি। তারা চলে গেছেন।
গত সপ্তাহের শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নাহিদ ইসলামসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। সেদিন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান (সদ্য বদলি হওয়া) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। নাহিদ ছাড়া অপর দুজন হলেন আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
পরদিন সন্ধ্যায় সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকেও ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। এরপর রোববার ভোরে মিরপুরের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তুলে আনা হয় নুসরাত তাবাসসুমকে। এরপর থেকে তারা মিন্টো রোডে ডিবির কার্যালয়ে ছিলেন।
সেখানে থাকা অবস্থায় এক ভিডিও বার্তায় আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন এই ৬ সমন্বয়ক। তবে তাদের দিয়ে জোর করে এই ঘোষণা দেয়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অন্য সমন্বয়করা। পরে তাদের সঙ্গে এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে দুই দফায় খাবার খাওয়ার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে আবারো আলোচনায় আসেন মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উচ্চ আদালতও।
তাদের ছেড়ে দেয়া সংক্রান্ত একটি রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট মন্তব্য করেন, ডিবি অফিসে যাকে-তাকে ধরে নিয়ে যাবেন, তারপর খাবার টেবিলে বসাবেন। এভাবে জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে ১৪ দলীয় জোটের নেতারা হারুন অর রশীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সমালোচনা করেন। এরই মধ্যে হারুনকে ডিবি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/আরআইআর/একে