Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধীরা আইয়ূবের বীজ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ জুলাই ২০২৪ ২০:১১ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৪ ০১:৩৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তিকারীদের ১০দিনের মধ্যে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। চট্টগ্রামে এক সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতা যারা করছেন, তারা পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ূব খানের বীজ।

বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সমাবেশ থেকে জেলা-উপজেলা-ইউনিয়নে রাজাকারের তালিকা প্রকাশসহ আরও বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে আজ এদেশের মানুষকে পাকিস্তানিদের টয়লেট পরিষ্কার করতে হতো। যারা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতা করছে, তারা আইয়ূব খানের বীজ। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তানরা পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করে বক্তব্য দেওয়া ছাত্রদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করার দাবি জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘কোটা নিয়ে যে কেউ আন্দোলন করতে পারে। আপত্তি আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে যে বক্তব্যে দেওয়া হচ্ছে সেটা নিয়ে। যে ছাত্ররা এ বক্তব্য দিয়েছে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা দেওয়া হোক। আপনারা যা ইচ্ছে তা-ই করবেন, মুক্তিযোদ্ধারা ঘরে বসে আঙ্গুল চুষবে সেটা তো হয় না। আমরা এখনও বেঁচে আছি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে কোনো বক্তব্য মুক্তিযোদ্ধারা সহ্য করবে না। আপনাদের সাহস থাকলে যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করুন। এমন একটি শক্তি এ আন্দোলনকারীদের মধ্যে আছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এখনও মেনে নেয়নি। তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’

‘বর্তমানে যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজম্ম, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কী সেটা আগে জানুন। সেই চেতনা বাস্তবায়নের জন্য আপনারা আন্দোলনে নামেন। বাংলাদেশ এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহন করছে না। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম চেতনা ছিল রাষ্ট্রের সর্বত্র বাংলা ভাষার প্রচলন। সেটা হয়নি। শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গঠনই ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যদি গঠন হতো বিরোধী পক্ষ এত আস্ফালন পেত না’– বলেন মাহফুজুর রহমান।

সমাবেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের পক্ষে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক রাসেল।

দাবিগুলো হলো- কোটা ব্যবস্থাকে ইস্যু করে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার নিয়ে কটূক্তিকারীদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সাংবাধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ১৯৭২ থেকে ১৯৯৬ এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কতজন বীর মু্ক্তিযোদ্ধা বা তাদের পোষ্যরা চাকরি পেয়েছেন কোটার মাধ্যমে, অনতিবিলম্বে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা।

এ ছাড়া রাজাকারের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে প্রত্যেক ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলায় টানানো এবং ঘৃণাস্তম্ভ তৈরি করা। রাজাকার পরিবারের সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত, তাদের পরিবারের সব সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা এবং ভবিষ্যতে যাতে কোনো রাজাকারের প্রজন্ম সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না পায় সেটা আইন করে নিশ্চিত করা।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নগর শাখার আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকুর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান সজিব ও জেলা শাখার সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেলের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নগর শাখার ডেপুটি কমান্ডার শহিদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, জেলার ডেপুটি কমান্ডার আবদুর রাজ্জাক, শাহ আলম, নগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

আইয়ূব খান টপ নিউজ বীজ মুক্তিযোদ্ধা কোটা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর