শ্রেণিকক্ষের বিরোধ গড়িয়েছে খুনে— অভিযোগ জুবায়েরের পরিবারের
৮ জুলাই ২০২৪ ০৯:১৯ | আপডেট: ৮ জুলাই ২০২৪ ১৩:২৭
ঢাকা: সহপাঠীর বাসা থেকে মিরপুর কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান রাফিতের (১৮) মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ওই বাসায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানায়। নিহত জুবায়েরের পরিবার বলছে, ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করা জুবায়েরের সঙ্গে তারই এক সহপাঠী রাজিন চৌধুরীর বিরোধ হয়েছিল শ্রেণিকক্ষে। এর জের ধরেই রাজিন ও তার বাবা ইকবাল চৌধুরী নিজেদের বাসায় ডেকে নিয়ে জুবায়েরকে হত্যা করেছেন।
শনিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে মিরপুর কমার্স কলেজের পেছনে লাল ভবনের তৃতীয় তলায় সহপাঠীর বাসায় পাওয়া যায় জুবায়েরের মরদেহ। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক)। রোববার (৭ জুলাই) সেখানেই জুবায়েরের মরদেহ নিতে হাজির হয়ে পরিবারের সদস্যরা এমন অভিযোগ করেন।
জুবায়েরের মামা নুরুজ্জামান জানান, জুবায়ের ছিলেন কলেজের ক্লাস ক্যাপ্টেন। এক মাস আগে তার এক সহপাঠীর সঙ্গে আরেক সহপাঠী রাজিনের মারামারি হয়। ওই সময় রাজিনের বিপক্ষে কথা বলেন জুবায়ের। ক্ষুব্ধ হয়ে রাজিন ক্লাসেই জুবায়েরের ওপড় চড়াও হন। তখন জুবায়ের কলেজের অধ্যক্ষের কাছে নালিশ করেছিলেন।
আরও পড়ুন- মিরপুরে কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা
নুরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘কলেজের অধ্যক্ষ রাজিনের মা-বাবাকে তলব করেছিলেন। তাদের সামনেই অধ্যক্ষ রাজিনকে সতর্ক করে দেন। আমাদের মনে হয়, এই ক্ষোভ থেকেই রাজিন ও তার বাবা কৌশলে জুবায়েরকে তাদের বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। তাদের ধরতে পারলেই আসন সত্য বেরিয়ে আসবে।’
জুবায়েরদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। বাবা আবুল বাশার ভূমি অফিসে চাকরি করেন, মা আয়েশা সিদ্দিকা রুমী গৃহিণী। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে জুবায়ের সবার বড়। ঢাকায় মিরপুর ১ নম্বর রোডের রাইনখোলা এ-ব্লকে মামার বাসায় থেকে মিরপুর কমার্স কলেজে পড়তেন জুবায়ের।
অন্যদিকে অভিযুক্ত রাজিনের বাবা ইকবাল চৌধুরী একজন আইনজীবী এবং মা ঝিনাইদহের একটি কলেজের শিক্ষক বলে জানতে পেরেছে জুবায়েরের পরিবার।
জুবায়েরের মামা নুরুজ্জামান বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় কলেজ বন্ধ ছিল। কিন্তু কোচিং খোলা ছিল। গতকাল (শনিবার) ১২টার দিকে দুই বিষয়ে কোচিং করতে বাসা থেকে বের হয় জুবায়ের। একটি বিষয়ের কোচিং শেষ করে অন্যটায় যায়নি। বাসাতেও আসেনি। ও মোবাইল ব্যবহার না করায় যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। পরে কলেজের এক শিক্ষকের মাধ্যমে জুবায়েরের মৃত্যুর খবর পাই।’
জোবায়েরের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি জানান, জুবায়েরের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি জখম ছিল। এ ছাড়া মরদেহের ডান চোখের পাশে কাটা, গলায় তিন ইঞ্চি পরিমাণ কাটা জখম ও বুকের ডান পাশে কাটা জখম আছে। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন।
প্রাথমিক তদন্ত সুরতহাল প্রতিবেদনে এসআই আমিনুল বলেছেন, সহপাঠীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে জুবায়েরকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে জুবায়েরের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মামা নুরুজ্জামান মরদেহটি বুঝে নেন। নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে জুবায়েরকে দাফন করা হবে।
সারাবাংলা/এসএসআর/টিআর
কলেজছাত্রকে হত্যা কুপিয়ে হত্যা জুবায়ের হাসান রাফিত টপ নিউজ সহপাঠীর বাসায় হত্যা