৫৫৯৪ কোটির বাজেট, ২ হাজার কোটি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ডিএনসিসির
৭ জুলাই ২০২৪ ২১:৪১ | আপডেট: ৮ জুলাই ২০২৪ ০৯:২১
ঢাকা: উন্নয়ন ব্যয় খাতে প্রায় ৩৩ শতাংশ ও রাজস্ব ব্যয় খাতে প্রায় ১৬ শতাংশ বরাদ্দ রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। পাঁচ হাজার ৫৯৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার এই বাজেটে ডিএনসিসি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে দুই হাজার কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রা সদ্যগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের প্রায় দ্বিগুণ।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনের হলরুমে দ্বিতীয় পরিষদের ২৯তম করপোরেশন সভা ও বাজেট সভায় এই বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও অনুমোদন দেওয়া হয়।
ডিএনসিসির সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি আকারের বাজেটে রাজস্ব আদায় ছাড়াও সরকারি অনুদান, আবর্তক খাতে সাহায্য মঞ্জুরি, অন্যান্য উৎস এবং সরকারি ও বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে অর্থসংস্থানের পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ও বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে আসবে দুই হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, বাকি উৎস থেকে আসবে দুই হাজার ১৩৮ কোটি টাকা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হবে উন্নয়ন খাতে, যেখানে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। এই ব্যয় মোট বাজেটের ৩৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। এ ছাড়া রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯২ কোটি ১৫ লাখ টাকা, যা বাজেটের ১৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
বাজেট ঘোষণার সময় ডিএনসিসি মেয়র বলেন, মোট ব্যয়ের অর্ধেকের বেশি হবে ডিএনসিসির নিজস্ব তহবিল থেকে। এ সময় জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক হাজার ৭৮ কোটি টাকা রেকর্ড রাজস্ব আদায় করেছে ডিএনসিসি। গত চার বছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৭৬ শতাংশ।
সভার শুরুতে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলমের সূচনা বক্তব্যের পরে ডিএনসিসির প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. বরকত হায়াত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। এ সময় উপস্থাপিত সংশোধিত বাজেট ও নতুন বাজেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন লাভ করে।
সভাপতির বক্তৃতায় মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল, সিটি করপোরেশনকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, সক্ষমতা বাড়াতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে রাজস্ব বাড়ানোর বিকল্প নেই। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে রাজস্ব আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ডিএনসিসির মোট বাজেটের ৫৩ শতাংশ ব্যয় নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেয়া হবে।
মেয়র বলেন, করহার না বাড়িয়েও রাজস্ব আদায়ে নতুন মাইলফলক তৈরি করেছে ডিএনসিসি। এখন অনালাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে নাগরিক ভোগান্তি কমেছে। দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধ করা সম্ভব হয়েছে। নিশ্চিত হয়েছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। রাজস্ব আদায়ও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
বাজেটে তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র আতিকুল বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষা, জলাবদ্ধতা নিরসন ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা— সুস্থ, সচল ও আধুনিক স্মার্ট ডিএনসিসি গড়তে বাজেটে এই তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও খাল উদ্ধার করে খালের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়নসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসানসহ ডিএনসিসির সব বিভাগীয় প্রধান এবং কাউন্সিলরও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর