স্কলাসটিকাসে ছাত্রী নিপীড়ন, প্রধান শিক্ষিকার শাস্তি দাবি
৫ জুলাই ২০২৪ ১৮:৫৩ | আপডেট: ৫ জুলাই ২০২৪ ২০:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় চট্টগ্রামের সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষিকাসহ ৪ শিক্ষকের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন করেছে অভিভাবকরা।
শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সচেতন অভিভাবকদের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে প্রায় শতাধিক অভিভাবক অংশ নেন।
গত ৯ জুন চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটার সেন্ট স্কলাসটিকাস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে টিফিন বিরতির সময় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরদিন দুই শিক্ষককে আসামি করে ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন।
অভিযোগে পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে মামলায় অভিযুক্ত রকিব উদ্দিন (৩৫) ও সুরজিৎ পাল (৩৩) নামে দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। অনেকদিন ধরেই সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী সেলিন কস্তার মদদে ওই শিক্ষকরা ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করছিলেন বলে দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। এছাড়া ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় ওমর ফারুক নামে এক শিক্ষক সহযোগিতা করার অভিযোগও করেছিলেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সর্বশেষ গত ৩০ জুন প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী সেলিন কস্তা তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে নগরীর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। অভিযোগে তিনি কয়েকজন শিক্ষক তার কক্ষে ঢুকে তাকে হত্যার হুমকি দেন বলে উল্লেখ করেছেন। তবে ওই শিক্ষকদের ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করছেন অভিভাবকরা।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষিকা তার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে তিনি জিডিতে উল্লেখ করেছেন। স্কুলের ঘটনার বিষয়টি আমাদের সিনিয়রদের নজরে আছে।’
এদিকে মানববন্ধনে সানজিদা মুনতাহা নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘কিছু নরপিশাচের কারণে আমাদের সন্তানরা আজ স্কুলে নিরাপদ নয়। সেসব নরপিশাচদের আমরা দৃষ্টান্ত শাস্তি চাই। আমরা অভিভাবকরা যদি এগিয়ে না আসি তাহলে এরকম ঘটনা বারবার দেখতে পাব। বারবার এসব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। ফলে যারা অন্যায় করছে তারাও পার পেয়ে যাচ্ছে।’
আলী ইউসুফ নামে আরেক অভিভাবক বলেন, ‘যেসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষিকা জিডি করেছেন তারা সত্য উদ্ঘাটন করেছিলেন। তাদের শায়েস্তা করতেই তাদের বিরুদ্ধে এ জিডি করা হয়েছে। তারা নিরপরাধ। আমাদের কন্যারা আজ স্কুলে নিরাপদ নয়। প্রধান শিক্ষক ও ওমর ফারুক ওই যৌন নিপীড়নকারী স্যারদের ইন্ধনদাতা। আমাদের বাচ্চারা যাতে নিরাপদে স্কুলে যেতে পারে সেজন্য তাদের আগে বহিষ্কার করতে হবে। তাহলেই স্কুলের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে।’
স্কুলের সাবেক শিক্ষিকা ব্রিজেট ডায়েস বলেন, ‘সত্যের পক্ষে আমার দৃঢ় অবস্থান সবসময় ছিল এবং থাকবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ যা করছে ভালো করছে না। যে ঘটনা স্কুলে ঘটছে এজন্য আমি পুরো দায়ী করবো প্রধান শিক্ষিকাকে। ২০২২ সালেও এরকম অভিযোগ সুরজিতের বিরুদ্ধে উঠেছিল। কিছুদিন সাসপেন্ডও হয়েছিল সে। পরে তাকে আবার ফিরিয়ে আনেন প্রধান শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষিক যদি আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিতেন ওই শিক্ষকরা এতকিছু করতে পারতেন না।’
মো. মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন জানে আলম, অঞ্জন শিকদার ও রতন দাশ।
সারাবাংলা/আইসি/এমও
ছাত্রী নিপীড়ন টপ নিউজ প্রধান শিক্ষিকা শাস্তি দাবি স্কলাসটিকাস