শাহবাগ ছেড়েছে আন্দোলনকারীরা, বৃহস্পতিবার ফের অবরোধ
৩ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩১ | আপডেট: ৪ জুলাই ২০২৪ ০০:০৭
ঢাবি: আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেও দেড়ঘণ্টা অবরোধ করে শাহবাগ ছেড়েছে ২০১৮ সালে হাইকোর্ট প্রদত্ত কোটা সংক্রান্ত আদেশ পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই বেলা ১১টায় ফের শাহবাগ অবরোধ করবেন তারা।
বুধবার (৩ জুলাই) বেলা আড়াইটা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
দুপুর গড়াতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর সামনে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নিতে আহ্বান জানান কিছু শিক্ষার্থী। পরে, বেলা একটা থেকে জাতির জনল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, শহীদুল্লাহ হলসহ বিভিন্ন হল থেকে আলাদা আলাদা ব্যানার নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা।
বেলা আড়াইটার দিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিণ শেষে টিএসসি সংলগ্ন সড়ক ধরে দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্ট গেট প্রদক্ষিণ শেষে শাহবাগ এসে শেষ হয়।
পরে, বেলা ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত টানা অবরোধ শেষে শাহবাগ ছাড়েন আন্দোলনকারীরা।
এসময়, হাইকোর্ট মাজারসংলগ্ন গেইটের সামনে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বেলা পৌনে চারটার দিকে মৎস্যভবন হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:
- কোটা বাতিলের দাবিতে আজও শাহবাগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- অবরুদ্ধ শাহবাগ— হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহালে আদেশ বাতিলের দাবি
- শাহবাগ ছাড়ল শিক্ষার্থীরা, বুধবার ফের অবরোধ
- অবরুদ্ধ শাহবাগ— হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহালে আদেশ বাতিলের দাবি
এসময় শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব, প্রেসক্লাব, বাংলামটর ও টিএসসিগামী সড়কগুলোতে যানচলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। তবে অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’; ‘আঠারোর পরিপত্র, পুনর্বহাল করতে হবে’; ‘কোটাপ্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’; ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’; ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, একটি রাষ্ট্রে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকলে সেই রাষ্ট্রে কীভাবে মেধাবীরা দেশসেবার সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশের সংবিধানের মূলকথা হচ্ছে সুযোগের সমতা। কিন্তু কোটাব্যবস্থার মাধ্যমে মূলত এই সমতা হরণ করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী কোটাসহ হাতেগোনা কিছু পিছিয়ে পড়া লোকের জন্য কোটা থাকতে পারে। কিন্তু এত পরিমাণ কোটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
এদিকে, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে কি না, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
অবরোধ কর্মসূচি থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) হাইকোর্টের শুনানিটি শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সারাবাংলা/আরআইআর/এনইউ