হালদায় মৃত ডলফিন, বয়সের কারণে মৃত্যু– বলছেন গবেষকরা
২৫ জুন ২০২৪ ২২:১৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেড় বছর পর চট্টগ্রামের হালদা নদীতে একটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে। বয়সজনিত কারণে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা এলাকায় নদীতে ভেসে আসে মৃত ডলফিনটি। স্থানীয়রা সেটি উদ্ধার করে নদীর তীরে তোলেন। খবর পেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিচার্স ল্যাবরেটরির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাত ফুট দীর্ঘ ডলফিনটির ওজন ৮৮ দশমিক ৮৯ কেজি। কয়েকদিন আগে ডলফিনটি মারা গেছে। শরীরে পচন ধরেছে। আমরা সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সুরতহাল প্রতিবেদনে আমরা বয়সজনিত কারণে মৃত্যু উল্লেখ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘তবে বয়স নির্ধারণ করা যায়নি। মৃত ডলফিনটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। ছয়-সাত মাস পর আমরা ডলফিনটির হাড় সংগ্রহ করব। তখন পরীক্ষা করে বলতে পারব, তার বয়স কত হয়েছিল। তবে একটি ডলফিন সাধারণত পনেরো থেকে বিশ বছর বাঁচতে পারে।’
এ নিয়ে হালদা নদীতে ৪১টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান গবেষক মনজুরুল কিবরিয়া। এর আগে, সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর হালদা নদী থেকে একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছিল।
গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিনের বিচরণ আছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে। ২০১৭ সাল থেকে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর ডলফিন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন গবেষকরা। তখন থেকে হালদা ও কর্ণফুলীতে মৃত ডলফিনের সংখ্যা গণনা শুরু হয়।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে হালদা নদীতে ১৮টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০টি, ২০২১ সালে পাঁচটি এবং ২০২২ সালে ছয়টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া কর্ণফুলী নদীতে এ পর্যন্ত দু’টি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে।
কর্ণফুলী ও হালদা নদীপাড়ের বাসিন্দারা স্থানীয়ভাবে একে হুতুম বা শুশুক নামে অভিহিত করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে বিপন্ন হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম