কবি অসীম সাহা না ফেরার দেশে
১৮ জুন ২০২৪ ১৮:৩৫ | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৪ ০২:৫৪
ঢাকা: শরীর আর শারীরিক জটিলতার কাছে হার মানলেন কবি অসীম সাহা। পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এই কবি।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুর ২টার দিকে বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে অসীম সাহার। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পারকিনসনস রোগ, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি।
বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসক ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন সারাবাংলাকে বলেন, বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে কবি অসীম সাহা বিএসএমএমইউয়ের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে এইচডিইউতে নেওয়া হয় সেখানেই দুপুর ২টার দিকে হার্ট অ্যাটাক করলে তাকে আর ফেরানো যায়নি।
কবির জ্যেষ্ঠ সন্তান অভ্র সাহা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। ছোট ছেলে অর্ঘ্য সাহা বাংলাদেশেই থাকেন। অর্ঘ্য সারাবাংলাকে বলেন, বাবা মরণোত্তর দেহ দান করার ইচ্ছার কথা আমাদের বারবার বলেছেন। আমাদেরও তেমনই ইচ্ছা। দাদা (অভ্র সাহা) দেশে ফিরলে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত বাবার মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়েছে।
গত বছরেও নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল অসীম সাহাকে। এ বছরের শুরুর দিকেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। চিকিৎসকরা তখন জানিয়েছিলেন, শারীরিক নানা জটিলতার পাশাপাশি বিষণ্ণতাতেও ভুগছিলেন কবি। এবার সব জটিলতার ঊর্ধ্বে চলে গেলেন তিনি।
বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র অসীম সাহার জন্ম ১৯৪৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, নানাবাড়ি নেত্রকোনায়। পৈতৃক নিবাস মাদারীপুর। বাবা অখিল বন্ধু সাহা ছিলেন অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি।
১৯৮২ সালে প্রকাশিত হয় অসীম সাহার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পূর্ব-পৃথিবীর অস্থির জ্যোৎস্নায়’। এরপর একে একে লিখেছেন ‘কালো পালকের নিচে’, ‘পুনরুদ্ধার’, ‘উদ্বাস্তু’, ‘মধ্যরাতের প্রতিধ্বনি’, ‘অন্ধকারে মৃত্যুর উৎসব’। লিখেছেন গল্প, উপন্যাস। বিদেশি বিভিন্ন কবির কবিতা অনুবাদও করেছেন।
আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ময়মনসিংহ সাহিত্য-সংস্কৃতি ফোরাম সম্মাননা, শৃন্বন্তু কবিসম্মাননা, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর কবিসম্মাননাসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন অসীম সাহা। সামগ্রিকভাবে সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৯ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর