যানবাহনের চাপ নেই পাটুরিয়া ঘাটে
১৫ জুন ২০২৪ ১৪:৫৬
মানিকগঞ্জ: যানবাহনের চাপ নেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে। আরিচা–কাজিরহাট রুটের অবস্থা একই। যানবাহন ঘাটে আসামাত্রই কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই সরাসরি উঠে যাচ্ছে ফেরিতে। ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ছাড়া পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি-লঞ্চ পার হতে পেরে স্বস্তিতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা। তবে পদ্মার পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে দ্বিগুণ সময় লাগছে।
কয়েক বছর আগেও ঈদে পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়া নৌরুট ছিল যাত্রী ভোগান্তির অন্যতম নাম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রী এবং যানবাহন পাটুরিয়া ঘাটে তীব্র যানজটে নাকাল থাকতো। কিন্তু সেই দৃশ্যপট পাল্টে গেছে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই। একই সঙ্গে দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষজনের কাছে এই নৌরুটের গুরুত্ব কমে গেছে অনেকাংশেই।
শনিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে ফেরি পারাপারে যানবাহনের চাপ অনেক কম। তবে গাবতলী থেকে লোকাল পরিবহনে ঘাটে আসা যাত্রীর চাপ বেশি। যানবাহন থেকে নেমেই তারা সোজা ফেরি কিংবা লঞ্চে উঠে যাচ্ছেন ।
সরেজিমনে দেখা যায়, প্রত্যেকটা ফেরিতে যানবাহনের চাপের চাইতে যাত্রীর চাপ বেশি। তাছাড়া লঞ্চঘাটে সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ বেশি দেখা গেছে। যাত্রী এবং যানবাহন পারাপারে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। লঞ্চ চলাচল করছে সর্বমোট ৩৪টি।
পাটুরিয়া ঘাটে কথা হয় ঈদে ঘরমুখো বেশ কয়েকজন যাত্রী সঙ্গে। তারা জানান, যানজট মুক্ত এবং স্বস্তিতে তারা যাচ্ছেন যে যার আপনগৃহে।
আলফাডাঙ্গা এলাকার যাত্রী মোকলেস মিয়া বলেন, পাটুরিয়া ঘাটে এখন আর ফেরির জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় না। সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটেই ফেরিতে উঠতে পারছি। কোনো ধরনের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়নি। অথচ বিগত বছরে ঈদের সময় এই পাটুরিয়া ঘাট পাড়ি দিতে সময় লাগতো পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টারও বেশি সময়। পদ্মা সেতু কারণে এখানে এখন চাপ নেই।
ফরিদপুরের যাত্রী আলম মিয়া বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘাটে এসেই মাত্র ২০ মিনিটে ফেরিতে উঠতে পেরেছি। ঘাটে কোনো ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। তবে পদ্মার পানি বৃদ্ধি এবং স্রোতের কারণে ফেরি চলাচলে সময় নিচ্ছে বলে তিনি জানান।
বাস চালক রহিম উদ্দিন জানান, ঈদের দুদিন আগে পাটুরিয়া ঘাটে স্বস্তিতেই পার হতে পেরেছি। গাবতলী থেকে রাস্তায় কিছুটা বিড়ম্বনা থাকলেও পাটুরিয়া ঘাটে কোনো ধরনের বিড়ম্বনা কিংবা দুর্ভোগে পড়তে হয়নি। এতে যাত্রীরাও বেশ খুশি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা ঘাটের ডিজিএম মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, ঈদে ঘর মুখো যাত্রী এবং যানবাহন পারাপারে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। পাশাপাশি লঞ্চ চলাচল করছে ৩৪টি। সকাল থেকেই ফেরিগুলোতে যানবাহনের চেয়ে যাত্রীর চাপ বেশি। তাছাড়া ফেরিতে সকাল থেকেই বহু মোটরসাইকেল পার হচ্ছে।
তিনি জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌ-রুট অত্যন্ত ব্যস্ত ছিল। যার কারণে দুটি ঘাটেই ঈদের আগে ও পরে যানজট বেঁধে যেত। কিন্তু গেল কয়েক বছর ধরে সেই অবস্থা এখন নেই। যানবাহন শ্রমিক এবং যাত্রীদের কোন অভিযোগও এখন শুনতে হয় না।
তিনি আরও জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ও স্রোতের কারণে ফেরি পারাপার স্বাভাবিক সময়ের চাইতে একটু বেশি সময় লাগছে।
এদিকে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে সকাল থেকেই যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গাবতলী থেকে লোকাল গাড়িতে যাত্রীরা লঞ্চ ঘাটে ভিড় করছেন। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা কাজিরহাট নৌরুটে মোট ৩৪টি লঞ্চ দিয়ে ঈদে ঘরমুখো যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
লঞ্চ ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, ঘাটে যাত্রীর চাপ বেশি থাকলেও দুর্ভোগ নেই। পর্যাপ্ত লঞ্চ থাকায় যাত্রীরা স্বস্তিতে পারাপার হচ্ছেন।
সারাবাংলা/এনইউ