অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণ ৮ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকা
১৩ জুন ২০২৪ ২৩:৫১ | আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ১২:৫৪
ঢাকা: অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের নেওয়া পুঞ্জীভূত ঋণের পরি মাণ বেড়ে দাড়িয়েছে আট লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকায়। এর মধ্যে ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে চার লাখ ৩৩ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা এবং ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে চার লাখ ২১ হাজার ৯৫ কোটি টাকা। এই সময়ের মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমলেও বেড়েছে ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক আর্থিক সংকট, বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকা, আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ঋণমান কমে যাওয়ায় সরকারের বিভিন্ন ধরনের ব্যয় মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎসগুলোতেই ঝুঁকতে দেখা গেছে। এ কারণে ঋণ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চে সরকারের অভ্যন্তরীণ উৎসের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ ছিল সাত লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪ সালের মার্চে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকায়। তবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছর সরকারের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে সরকারের অভ্যন্তরীণ উৎসের প্রকৃত ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬৫ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণ নেওয়া কমেছে ১৮ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে সরকারের ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাংকে সরকারের ঋণ ছিল ৬১ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) ব্যাংক খাত থেকে সরকার নিট ঋণ নিয়েছে ৬১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, মূলস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অর্থনীতিবিদদের পরামর্শেই ব্যাংক খাতে ঋণ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে গত জুলাই-মার্চ সময়ে সরকারের ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া কমলেও ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে সরকার ঋণ করেছে ২৪ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ ১২ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে। ফলে জুলাই-মার্চ সময়ে ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে সরকারের ঋণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার কোটি ৯৫ টাকায়, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল চার হাজার ৩৪ কোটি টাকা।
এদিকে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট থাকা সত্ত্বেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আরও ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। ঘাটতি বাজেট মেটাতে আগামী অর্থবছরে ব্যাংক থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ঘোষিত বাজেটের ১৭ শতাংশের বেশি।
এর আগে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর