Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মাছি মারা ছাড়া এই মুহূর্তে ব্যাংক স্টাফদের কোনো কাজ নেই’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ জুন ২০২৪ ১৮:৩৬ | আপডেট: ১১ জুন ২০২৪ ২১:৪৯

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ক্ষমতাঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীকে ব্যাংক থেকে অন্যায় সুবিধা দেওয়ার কারণে ব্যাংকগুলো এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। ব্যাংক থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপি হয়েছে তারা। ঋণখেলাপিরা এখন উল্লাসে মেতে উঠেছে। আর সাধারণ গ্রাহকরা ঈদের আগে ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ থেকে প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে পারছে না। বসে বসে মাছি মারা ছাড়া এ মুহূর্তে ব্যাংক স্টাফদের কোনো কাজ নেই।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১১ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির এখন টালমাটাল অবস্থা। দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের কথা প্রতিদিনিই গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। পুঁজি পাচারকারী, হুন্ডিওয়ালা, বিপুল অংকের ব্যাংক ঋণ নিয়ে বছরের পর বছর ফেরত না দেওয়া, বিদেশে পাচার করে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী হওয়া, ডলারের তুলনায় টাকার মূল্য কমে যাওয়া, প্রবাসী আয় ও রেমিটেন্স কমে যাওয়া এবং অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ গভীর সংকটে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনাকে বর্তমান অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণ হিসেবে চালানোর চেষ্টা করছে করেছে সরকার। অথচ যুদ্ধের আশপাশের কোনো দেশে মুদ্রাস্ফীতি হয়নি এবং খাদ্যপণ্যের দামও মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি এখন কোনো উন্নয়নশীল দেশেই প্রকট নয়। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও মূল্যস্ফীতি ৪.৮ শতাংশ।’

রিজভী বলেন, ‘ভারতের বর্তমান রিজার্ভ ৬৪৩ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ থাকা উচিত ৮০ থেকে ৯০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু, তা এখন শূন্যের দিকে নেমে আসছে। লুটপাট, টাকা পাচার, অপচয় এবং মহাদুর্নীতি বাক্সের মধ্যে রেখে মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব নয়। ব্যক্তিগত আয় কমে যাওয়ায় এবং জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কালোছায়া পরিব্যাপ্ত। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান আওয়ামী কতৃর্ত্ববাদী শাসনের অভিঘাতে বিপন্ন প্রায়। আইন-আদালত থেকে শুরু করে সর্বত্র আওয়ামী হিংস্রতার আঘাত সুষ্পষ্ট। দুঃশাসনের আঘাতে আইনের শাসন আত্মবলী দিয়েছে। যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব বারবার জামিন পাওয়ার পরও নতুন মামলা দিয়ে তাকে জেলগেট থেকে কারাবন্দি করা হচ্ছে। সবাই মনে করে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই সাইফুল আলম নীরবকে কারাগার থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘গত ৫ জুন উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করলে কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়া মামলা না দেওয়ার জন্য আদালত আদেশ দিলেও সব মামলায় জামিনপ্রাপ্ত সাইফুল আলম নীরবকে আজও মুক্তি দেওয়া হয়নি। আওয়ামী বাকশালী শাসনের সংক্রমণে পুলিশি সিদ্ধান্ত সর্বোচ্চ মর্যাদা পায়। হাইকোর্টের নির্দেশকেও পুলিশ তোয়াক্কা করে না।’

তিনি বলেন, ‘গত ৫জুন চতুর্থ দফা উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিরোধী দলহীন এবং ভোটারশূন্য এই নির্বাচনে নিজেরা নিজেদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে একদলীয় উপজেলা নির্বাচন উপভোগ করেছে। লুট ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদ বাগিয়ে নিতে রক্তের বন্যা বইয়ে দেওয়া হয়েছে দেশের বিভিন্ন উপজেলায়। নজিরবিহীন এই উপজেলা নির্বাচনেও প্রাণহানি হয়েছে সাত জনের। হাজার হাজার মানুষ হামলার শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা এখনও গুরুতর।’

রিজভী বলেন, ‘জনগণ কতৃর্ক পরিত্যক্ত দল এখন আওয়ামী লীগ। এই দল টাকা লুটকারী পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভরশীল। তাই ভোটারশূন্য জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সরকার ও তাদের গৃহে পালিত নির্বাচন কমিশন মোটেও লজ্জিত নয়। আওয়ামী সরকার ও তাদের নির্বাচন কমিশনকে জনগণ বিবেচনা করে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বেহায়া হিসেবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সহ-সম্পাদক বেলাল আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/একে

টপ নিউজ বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক মাছি মারা