৪ জুলাই পর্যন্ত জামিন পেলেন ড. ইউনূস
২৩ মে ২০২৪ ১৩:১২ | আপডেট: ২৩ মে ২০২৪ ১৬:২৮
ঢাকা: শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বেলা ১১টার দিকে কাকরাইলে অবস্থিত শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা।
গত ১৬ এপ্রিল শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. ইউনূসকে ২৩ মে পর্যন্ত জামিন দিয়েছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।
ওই সময় আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেছিলেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ। কলকারখানা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় গত ১ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসসহ চারজন।
পরে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ওই আপিল সেদিন শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে তৃতীয় শ্রম আদালতের দেওয়া রায় ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এরপর গত ৩ মার্চ শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের (১৬ এপ্রিল) দিন ধার্য করেন।
এ মামলার অপর তিনজন আসামি হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
এ অবস্থায় তৃতীয় শ্রম আদালতের রায় ও আদেশ স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের অংশবিশেষের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলার বাদী হাইকোর্টে আবেদন (ক্রিমিনাল রিভিশন) করেন।
মামলার বাদী কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শকের করা এই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।
রুলে তৃতীয় শ্রম আদালতের ১ জানুয়ারি দেওয়া রায় ও আদেশের কার্যক্রম স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ২৮ জানুয়ারি দেওয়া আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
ওই রুলের ওপর গত ৬ মার্চ শুনানি শুরু হয় এবং ১৪ মার্চ শুনানি শেষে আদালত ১৮ মার্চ রায়ের জন্য তারিখ ধার্য করেন।
গত ১৮ মার্চ কয়েকটি দিক বিবেচনায় রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
হাইকোর্ট শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্তকরণ (কনভিকশন) আপিল নিষ্পত্তি না পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে রায় দেন।
তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তার দণ্ড বা সাজার রায় আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। একই সঙ্গে অর্থ দণ্ডও স্থগিত থাকবে। পাশাপাশি এক মাসের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনাদি বুঝিয়ে দিয়ে আদালতকে অবহিত করার আদেশও স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেন।
রায়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে বিদেশে যেতে হলে আদালতকে অবহিত করে বিদেশ যেতে বলা হয়েছে।
রায়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করার বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল যথামথ ঘোষণা করা হয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ