‘যার ঘড়ির দাম ৫০ লাখ, তিনি অটোরিকশা চালকদের বুঝবেন কী করে’
২০ মে ২০২৪ ১৫:০০ | আপডেট: ২০ মে ২০২৪ ১৭:৪২
ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘হঠাৎ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দিলেন ওবায়দুল কাদের। উনি নিজেই বলেছেন উনার হাতের ঘড়ির দাম অনেক। মানুষ বলে ৫০ লাখ টাকা! তিনি যে সানগ্লাস পরেন সেটারও অনেক দাম। লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে হয়তো! যার সানগ্লাসের দাম এত, ঘড়ির দাম ৫০ লাখ টাকার উপরে তিনি ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের মর্ম বুঝবেন কী করে?
সোমবার (২০ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক চা দিবস ও মুল্লুক চল দিবস উপলক্ষে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘হঠাৎ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দিলেন ওবায়দুল কাদের। যার সানগ্লাসের দাম এত, ঘড়ির দাম ৫০ লাখ টাকার উপরে তিনি ব্যাটারি চালিত রিকশাচালকদের মর্ম বুঝবেন কী করে! উনি কি জানেন, এরা একবেলা খায় নাকি দুই বেলা খায়?’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সন্তানরা বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। কেউ দুবাইয়ে, কেউ কানাডায়, কেউ মালয়েশিয়ায়। তারা তো এদের (রিকশাচালক) বিষয়ে জানে না। তারা (রিকশাচালক) এক বেলা চাল কিনতে পারছে না। দেশে আলুর দাম সিজনেও ৫০ টাকা। এটা কি ওবায়দুল কাদের জানেন? ওবায়দুল কাদের জানেন না, উনার নেত্রী শেখ হাসিনাও জানেন না।’
রিজভী বলেন, ‘ওনাদের প্রত্যেকটি নেতা এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন বিদ্যুৎ খাত থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেছে। বিভিন্ন উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে। শুধু টাকা পাচারের কাহিনী প্রতিদিন আমরা সংবাদপত্রের পাতায় পড়ছি। সুতরাং তারা কী করে ওই ব্যাটারিচালিত রিকশাওয়ালাদের করুণ কাহিনী জানবে।’
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘এই ব্যাটারিচালিত রিকশা নিশ্চয়ই কোনো দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। এই আমদানি করার লাইসেন্স কে দিল? ঢাকাসহ প্রতিটি শহরে ব্যাটারিচালিত যান চলাচল করে। এই রোড পারমিট কারা দিল? আপনার সরকারই দিয়েছে। এগুলো যারা আমদানি করেছে তারা আওয়ামী লীগের লোক। তারা আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী। আর যারা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছে তাদেরই দোষ হয়ে গেল? আপনাদের পেট ভরে বদ হজম হবে তারপরও আপনাদের টাকা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘অটোরিকশা চালকরা কিন্তু এমনি এমনি চালাতে পারে না। প্রশাসনের লোকদের টাকা দিতে হয়, স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হয়। এত ঘাটে ঘাটে টাকা দেওয়ার পর যতটুকু তাদের উপার্জন হয় সেটা দিয়ে কোনোরকম দিনযাপন করে তারা। আর এদের উপরেই আপনারা চালাচ্ছেন স্টিম রোলার। আপনি (ওবায়দুল কাদের) গরিবের আহার কেড়ে নিয়ে রাজত্ব করবেন, স্বর্গে বসবাস করবেন, ওই স্বর্গ থেকে বিদায় নিতে হবে। ওই স্বর্গে আপনারা আর বেশি দিন বসবাস করতে পারবেন না।’
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলামসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/এমও