অদৃশ্য শক্তি নয়, দেশ চালাচ্ছে জনগণের সরকার: ওবায়দুল কাদের
১২ মে ২০২৪ ২৩:১১
ঢাকা: দেশ পরিচালনা করছে জনগণ দ্বারা নির্বাচিত শেখ হাসিনার সরকার। কোনো অদৃশ্য শক্তি নয়। এই অদৃশ্য শক্তির ভাবনা বিএনপির মানসিক ট্রমা বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (১২ মে) বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কোনো অদৃশ্য শক্তি বাংলাদেশ চালাচ্ছে পরিষ্কার করে ফখরুল সাহেব এটি বলবেন কী? আরেকজন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাহেব বলেছেন সিন্দাবাদের দৈত্য নাকি সরকারের কাঁধে চেপেছে। তারা নাকি দেশ চালাচ্ছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিচালনা করছে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। অদৃশ্য শক্তি দ্বারা দেশ পরিচালনা করা বিএনপির আদর্শিক চরিত্র। বিএনপি আমলে হাওয়া ভবন ছিল তাদের বিকল্প পাওয়ার সেন্টার। দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমানের নির্দেশ ছাড়া কিছুই হতো না। যারা এভাবে চলে তারাতো অদৃশ্য শক্তির মানসিক ট্রামায় ভুগবে এটিই তো স্বাভাবিক।’
বিএনপির সংবাদ সম্মেলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির সংবাদ সম্মেলন মানে অসত্যকে সত্য বলে চালানোর সুনিপুণ কৌশল। সত্যকে পাশ কাটিয়ে অসত্য ও মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা, ইতিহাস বিকৃত করা, চলমান উন্নয়ন অগ্রগতিকে অস্বীকার এবং নিজেদের অতীত ইতিহাস ভুলে নিজেদের দায় ওপরের ওপর চাপিয়ে দেওয়া। মির্জা ফখরুল সাহেব অবিরাম মিথ্যা বলতে পারেন। বিএনপি নেতারা নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে মিথ্যাচার অপপ্রচার অবলীলায় করে যেতে পারে।’
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে সেতু মন্ত্রী বলেন, ৪২ ভাগের ওপরে ভোট পেয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বলতে যা বোঝায় নিরপেক্ষ নির্বাচন নির্বাচন কমিশন সেইরকম নির্বাচন করেছে। স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নির্বাচনি ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি জানতে চাই, ফখরুল সাহেব ২০০৯ সালের আগে নির্বাচনি ব্যবস্থা কার অধীনে ছিল? বলেন, আজকে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন শেখ হাসিনার অবদান। বাংলাদেশ একটা দল আছে বিএনপি, এই বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য এমন একটা নির্বাচন কমিশন চায় যারা বিএনপিকে নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি দেবে। এই গ্যারান্টি না পেলে বাংলাদেশে কোন নির্বাচনই নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নয়- এমনটাই মনে করে বিএনপি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি বয়কট করেছে। আন্দোলন করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। আজকে এই নির্বাচনের পক্ষে ইউরোপ আমেরিকার সহ অনেক বেশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার প্রয়াস ব্যক্ত করেছে।’
এ সময় মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সফর নিয়ে সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি আসছেন দু’দেশের সম্পর্ক কি আরো এগিয়ে নিতে এবং সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে কথাবার্তা বলবেন। এখন বিএনপি মনে করছে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আসবে কিনা- এ ধরনের উদ্ভট চিন্তাও তাদের থাকতে পারে। এরকম উদ্ভট চিন্তা তারা আগেও করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘কথামালার চাতুরি ছাড়া দেশবাসীকে দেওয়ার মতো বিএনপির কিছুই নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে দেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। খাদ্য সংকটের দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি খাদ্য উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ নামে। কালো চশমা পরা বিএনপি নেতারা এসব উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা লিপ্ত রয়েছে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, নির্বাচনের পর দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির পায়তারা চলছে। নেতাকর্মীদের সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেন। এবং সে চেষ্টা এখনো চলছে দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে।’
বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা- বিএনপির এমন দাবির প্রেক্ষিতে তিনি কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন জানতে চান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই বিএনপি আজকে মুখের বিষ অবাধে ছড়াতে পারছে। পুলিশ হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাসহ নানা অপকর্মের পরও সভা-সমাবেশ করতে পারছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
সারাবাংলা/এনআর/একে