Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গ্রামে না, লোডশেডিং দেবে গুলশান-বারিধারা-বনানীতে: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ মে ২০২৪ ২৩:১১ | আপডেট: ১০ মে ২০২৪ ১০:০৪

ঢাকা: গ্রামে লোডশেডিং কমিয়ে রাজধানীর গুলশান-বারিধারা-বনানীর মতো ‘অভিজাত এলাকা’য় লোডশেডিং দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকেও বলেছেন, তিনি যেন তার নিজের এলাকায় লোডশেডিং দেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। এ সময় সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলছিলাম, এক হাজার বা দুই হাজার মেগাওয়াট যেদিন লোডশেডিং হবে, গ্রামে আর লোডশেডিং দেবে না; দেবে গুলশান, বারিধারা, বনানীর মতো ‘বড় লোক’দের জায়গায়, যারা সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে।

সরকারপ্রধান বলেন, (অভিজাত এলাকায়) বাড়িতে লিফট, বাড়িতে টেলিভিশন, বাড়িতে এয়ারকন্ডিশন— তাদের একটু দুই ঘণ্টা করে (লোডশেডিং) দিলে আমার অনেক সাশ্রয় হয়। (তখন) আমার কৃষকের অভাব হবে না। এখন থেকে সেটাই করব। প্রতিমন্ত্রীকে বলছি, তুমি যেখানে থাকো, ওখানে লোডশেডিং দেখতে চাই। ওখানে লোডশেডিং দিতে হবে।

আরও পড়ুন- ‘উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জনগণ থেকে দূরে সরানো যাবে না’

শেখ হাসিনা বলেন, যে প্রচণ্ড গরম! এ অবস্থায় লোডশেডিং হয়েছে, আমরা সেটা স্বীকার করি। কিন্তু কৃষক যেন সেটা (বিদ্যুৎ) পায়, সেখানে কিন্তু ভর্তুকি দেওয়া হয়। সেখানে কোনো অভাব হয়নি।

বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র বহুমুখী করেছে। এখানে সোলার প্যানেল হচ্ছে। বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শুরু করেছি। কয়লাভিত্তিক করছি। তেলভিত্তিক-গ্যাসভিত্তিক সবই করছি। মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে চাই। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আমরা দিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে রাস্তা নির্মাণে খরচ বেশি বলে যারা সমলোচনা করেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ প্রশ্ন তোলে— বাংলাদেশে রাস্তা বানাতে এত খরচ কেন? এদের দেশের মাটি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। মাটির সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্কই নেই। আমাদের মাটি, এটা একটা ব-দ্বীপ। এ মাটি দোআঁশ মাটি, যাকে বলে জোবা মাটি। এ মাটি নরম। এখানে কোনো কিছু করতে গেলে… ওই যেনতেন করতে করতে গেলে দুচার দিনের বেশি থাকে না। সেখানে আমরা মাটি তুলে আধুনিক প্রযুক্তিতে রাস্তা তৈরি করছি। রাস্তা যখন চড়েন, দেখেন না? তার জন্য খরচ তো লাগবে। যেখানে শক্ত মাটি, সেখানে অত খরচ হয় না। নরম মাটি বলেই খরচ বেশি। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ মেট্রোরেল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন! এর কী প্রয়োজন ছিল? তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে তো যানজটমুক্ত হতো। আজ প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার মানুষ মেট্রোরেল দিয়ে চলতে পারে। এটায় যারা চড়ছে, তারা সুফল পাচ্ছে। যারা এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, তারা লজ্জা পাচ্ছে কি না জানি না।

বর্তমান সরকারের সঙ্গে অন্যান্য সরকারের উন্নয়নচিত্রের তুলনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১৫ বছরে যে পরিমাণ কাজ করতে পেরেছি, ওই ২১ বছর আর আট বছর, এই ২৯ বছরে কেউ করতে পেরেছে? পারেনি। পারবেও না। প্রকল্প দিয়েই তো আগে টাকা খাওয়া। আর আমরা প্রজেক্ট শেষ করে ছাড়ি। টাকা খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সরকার সমালোচকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা আরও বলেন, মানুষের কল্যাণে কী করণীয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করি। দেশের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ভোগ করবেন সবাই, আবার কথায় কথায় ব্যাঙ্গ করবেন আর প্রশ্ন তুলবেন! প্রশ্ন তোলার আগে নিজেরা কী করেছেন, কোন দল করেন— সেই দলের বৃত্তান্ত থেকে শুরু করে অপকর্মগুলো তো একবার চিন্তা করে নেবেন!

প্রধানমন্ত্রীর আগে বক্তব্য দেন দ্বাদশ সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের আজ বৃহস্পতিবার ছিল সমাপনী দিন। এরপর আগামী জুনে বসবে সংসদের তৃতীয় অধিবেশন, যেখানে আগামী ৬ জুন আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হবে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাপনী ভাষণ সংসদ অধিবেশন সংসদ নেতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর