Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশন জাতিসংঘে গৃহীত

সারাবাংলা ডেস্ক
৩ মে ২০২৪ ১১:২৩ | আপডেট: ৩ মে ২০২৪ ১৩:৩৪

সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশন উত্থাপন করছে বাংলাদেশ। ছবি: জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক একটি রেজ্যুলেশন উত্থাপন করেছিল বাংলাদেশ। সাধারণ পরিষদে রেজ্যুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে রেজ্যুলেশনটি উত্থাপন করেন। বৃহস্পতিবার (২ মে) ১১২টি দেশ এতে কো-স্পন্সর করেছে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির কার্যালয় থেকৈ পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, এ বছর আলোচ্য রেজ্যুলেশনটি একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। কেননা এ বছরে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা ও এ-সংক্রান্ত কর্মসূচি ২৫তম বর্ষে পদার্পণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে সরকার পরিচালনার সময় ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’র ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশনটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করে আসছে। এতে শান্তি ও অহিংসার সংস্কৃতিকে উন্নীত করার জন্য আটটি বিশেষ ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে সবাইকে সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে ২০১২ সাল থেকে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করে আসছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। ছবি: জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন

প্রস্তাবটি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রদূত মুহিত বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে শান্তির সংস্কৃতির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন। বলেন, আজ বিশ্ব ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব ও মানবিক মর্যাদা অবজ্ঞার মুখোমুখি। এই ক্রমবর্ধমান সংঘাত ও সহিংসতা উত্তরণে মানবমনে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার ভাবকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। সমতা ও সব মানুষের সমমর্যাদার চেতনাকে সমুন্নত করতে হবে ও সর্বোপরি যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে অনেক বেশি লাভজনক করে তুলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এবারের রেজ্যুলেশনে শান্তির সংস্কৃতি ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচির ২৫তম বার্ষিকী যথাযথভাবে পালন ও উদ্‌যাপনের জন্য সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে দিনব্যাপী একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আহ্বান করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া এ রেজ্যুলেশনে সাধারণ পরিষদের সদস্যরাষ্ট্র, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মিডিয়াসহ অন্যান্য অংশীজনদের শিক্ষা ও জনসচেতনতা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য আয়োজনের মাধ্যমে যথাযথভাবে এই বার্ষিকী পালনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, ‘জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রবর্তনের বাংলাদেশের উদ্যোগটি আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত। বৈষম্য, বর্ণগত অসহিষ্ণুতা ও পরাধীনতা আমাদের একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। এ কারণেই আমরা শান্তির প্রসারকে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক নীতিতে পরিণত করেছি।’

রেজ্যুলেশনটি বিবেচনার আগে শান্তির সংস্কৃতির ওপর সাধারণ পরিষদে একটি সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বহু সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিনিধি বক্তব্য দেন। এ সময় তারা শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রতিনিধিরা জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

১১২টি দেশ এ বছর বাংলাদেশের এই রেজ্যুলেশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে, যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটির প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত সমর্থনের সাক্ষ্য বহন করে বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

জাতিসংঘ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ টপ নিউজ শান্তির সংস্কৃতি শান্তির সংস্কৃতি রেজ্যুলেশন