‘ঋণ পুনঃতফসিলের কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে’
২ মে ২০২৪ ১৮:১৫ | আপডেট: ২ মে ২০২৪ ২২:১৪
ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন বলেছেন, আমাদের দেশের ঋণ খেলাপি, কর খেলাপি এবং অর্থপাচার একই সূত্রে গাঁথা। ঋণ পুনঃতফসিলের কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে। এজন্য বন্ডের মাধ্যমে টাকা ছাপিয়ে অর্থ সরবরাহ করতে হচ্ছে। ফলে মূল্যস্ফীতি কমছে না। শ্রেণিকৃত ঋণ আদায় ছাড়া টাকা ছাপানো বন্ধ করা কঠিন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধা। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানে অর্থনীতি বিটের শতাধিত গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন বলেন, ‘আমি মনে করি, ৩ থেকে ৬ মাসের স্বল্পমেয়াদী আমানতের সব বাধা দূর হওয়া উচিত। বিশ্বজুড়ে ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদী ঋণ দিয়ে থাকে। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে আমাদের দেশেও একই অবস্থা ছিল। পরে চাপের মুখে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেওয়া হয়। আমরা এখন স্বল্পমেয়াদী আমানত নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দিচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদী ঋণের জন্য ব্যাংকের ওপর নির্ভর না করে শেয়ারবাজারে যাওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘অনেক দেশ মূল্যস্ফীতি কমাতে পেরেছে। আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি এখনও ১০ শতাংশের কাছাকাছি। আমাদের মনিটরিংয়ে ফোকাস করতে হবে। আমদানিকারকের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে যে, টানা ১০ মাস ধরে মুদ্রাস্ফীতি খুব বেশি ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো কৃষক এক হাজার টাকা ঋণ খেলাপি হলে তাকে জেলে ঢোকানো হয়। কিন্তু যারা ১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ নিয়ে বসে আছে, তাদের কিছুই হয় না। ঋণের সুদ মওকুফ করা ভালো কোনো কাজ না।’
গ্রামাঞ্চলে ঋণের প্রবাহ কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমানতের একটি বড় অংশ গ্রামাঞ্চল থেকে আদায় করা হয়, তারপরও ঢাকা বা চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে ৮০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, ‘সুদ মওকুফ করা ৪৫ হাজার কোটি টাকা বাদ দিয়ে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ এখন ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। তা না হলে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ আরও বড় হতো।’
তিনি বলেন, ‘যারা বিনিময় হার নিয়ে আলোচনা করছেন, তাদের আগেই বলেছি, বিনিময় হারকে অতিমূল্যায়িত রাখা ঠিক নয়। প্রতিবেশি ভারত ধারাবাহিকভাবে তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে, আমরা সেভাবে এটা করিনি।’
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম