যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দুদল কয়েদির মধ্যে হুলুস্থুলকাণ্ড
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৩৫
যশোর: যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দুদল কয়েদির মধ্যে হুলুস্থুলকাণ্ড ঘটেছে। শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) কারাগারের নিউজেল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কারাগারে মোবাইল ফোনে কথা বলা নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ সময় চার-পাঁচজন হাজতি আহত হয়েছেন। তাদের ঠেকাতে গিয়ে দুইজন কারারক্ষীও জখম হন।
পরে হুইসেল বাজিয়ে কারারক্ষীরা ভেতরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা কারা উপ-মহাপরিদর্শক অসীম কান্তি পাল। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে। দুই গ্রুপের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। তবে, কারাগারের একটি সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে অসংখ্য দর্শনার্থী দেখা করার ঘরের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন। হঠাৎ হুইসেল বেজে ওঠে। মুহূর্তেই মানুষ দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। দর্শনার্থীদের দ্রুত বাইরে বের করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, সকল কারারক্ষী যে যার অবস্থায় ছিল তাড়াহুড়ো করে লাঠি নিয়ে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। এতে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি সৃষ্টি। কেউ কেউ বলতে থাকে আসামি পালিয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
কেন্দ্রীয় কারাগারে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কারাঅভ্যন্তরের নিউজেল এলাকার সামনে সন্ত্রাসী ভাইপো রাকিব ও আরেক সন্ত্রাসী সম্রাটের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় দু’গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। শেষমেষ তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দু’কারারক্ষী জখম হয়েছেন। তাদেরকে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আহত হাজতিদেরও সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তাৎক্ষণিক কারা কর্তৃপক্ষ জড়িত সাত-আটজনকে চিহ্নিত করেছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে পৃথক স্থানে রাখা হয়েছে। তাদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দু’কারারক্ষী ও ছয়-সাতজন হাজতিকে কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা সুস্থ রয়েছেন।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘ঘটনাটি সামান্য। তবে আকস্মিকভাবে একজন কারারক্ষী অ্যালার্ট হুইসেল বাজিয়ে ফেলেন। এতে করে বিষয়টি বড় আকারে রূপ নেয়।’
তিনি বলেন, ‘যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে শহরের দাগি কয়েকজন সন্ত্রাসী রয়েছে। তাদের মধ্যে ভাইপো রাকিব অন্যতম। এদের দু’টি গ্রুপের সদস্যদের বাইরেই কোন্দল ছিল। তারা কারাগারের ভেতরে ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা করেছে। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘কারারক্ষীদের ওপর হামলা চালানো হয়নি। তাড়াহুড়ো করে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে তারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।’
সারাবাংলা/একে