বঙ্গবাজার উচ্ছেদ অভিযানে লুটপাটের অভিযোগ
১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:২৭ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪৭
ঢাকা: গত দু’দিন ধরে রাজধানীর বঙ্গবাজারে দোকান অপসারণ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার (১৫ এপ্রিল) থেকে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। চলবে বুধবার (১৭ এপ্রিল) পর্যন্ত। কিন্তু এই উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে লুটপাটের অভিযোগ তুলেছেন বঙ্গবাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, সিটি করপোরেশন আগে থেকে কোনো নোটিশ না দিয়ে ভাংচুর শুরু করেছে। চাঁদ রাতে বিক্রির পর দোকানে যেসব মালামাল রেখে গিয়েছিলেন তা লুটপাট হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে অস্থায়ী দোকান উচ্ছেদ। দুই দিনে বঙ্গবাজারের অস্থায়ী মার্কেটের সব জিনিসপত্র এরই মধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। পুরো এলাকা জুড়ে কেবলমাত্র কিছু বাঁশের কাঠামো পড়ে রয়েছে। উচ্ছেদের দায়িত্ব পালন করছে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই)।
ভেকুর সাহায্যে সামনের দিক থেকে বাঁশের ও কাঠ দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী দোকান ভেঙে এক পাশে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর সেসব বাঁশ ও কাঠ স্থানীয় ভাসমান মানুষজন যে যেভাবে পারছে নিয়ে যাচ্ছে। রিকশা, ভ্যানগাড়ি এমনকি সিএনজির উপরে তুলেও বাঁশ নিয়ে যেতে দেখা যায়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নতুন করে দোকান বসানোর কোনো আসবাবপত্র অবশিষ্ট নেই। আবার বিনিয়োগ করে নতুন করে দোকান নির্মাণও সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন একাধিক ব্যবসায়ী।
এদিকে, উচ্ছেদ অভিযানে যুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মীরা জানান, অভিযান পরিচালনার জন্য আগেই দিনক্ষণ নির্ধারণ করা ছিল। ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়। উচ্ছেদের বিষয়টি হুট করে হয়নি। আগে থেকেই জানানো হয়েছিল। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরে যাওয়ার আল্টিমেটাম ছিল। নিয়ম মেনেই গতকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বর্তমান পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে নিজেদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সরকারের পুনর্বাসন সহায়তা প্রত্যাশা করছেন। তারা বলছেন, আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা না করেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অযৌক্তিক। আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা না হলে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন ধারণ করা কঠিন হয়ে যাবে। তারা আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডে বড়ধরনের ক্ষতিতে পরেছি। আমরা কোনো আর্থিক অনুদান পাইনি। এখন আবার না জানিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
অভিযান পরিদর্শন করতে আসা দোকান মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, অনুদানের যে টাকা পাওয়া গেছে তা কাউকে দেওয়া হয়নি। ব্যবসায়ীদের অন্যান্য মার্কেটে স্থানান্তরের চিন্তা করা হচ্ছে। মালিক সমিতির সদস্য শাহ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের আগে থেকেই জানানো হয়েছে যে, এই জায়গাগুলো সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তারা যেন আগেভাগেই তাদের মালামাল সরিয়ে নেন। এটি একবার-দুইবার নয়, অনেকবার বলা হয়েছে। এখন তারা মিথ্যা কথা বলছেন।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয় রাজধানীর সবচেয়ে পুরনো ও জনপ্রিয় পাইকারি কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজার। পরে এই মার্কেটের আধুনিক রূপদান এবং সেখানে ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। পরিকল্পনা করা হয় ‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণিবিতান’ ভবন নির্মাণের।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম