বাল্টিমোর সেতু ধস দুর্ঘটনা, নিখোঁজদের সন্ধানে অগ্রাধিকার: বাইডেন
২৭ মার্চ ২০২৪ ০০:২৯ | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৩
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড রাজ্যের বাল্টিমোর শহরে জাহাজের ধাক্কায় সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এসব ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা ও উদ্ধার তৎপরতাতেই সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। নিখোঁজের সংখ্যায় পরিবর্তন আসতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবারের (২৬ মার্চ) প্রথম প্রহরে রাত দেড়টার দিকে (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা) ওই ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজ নামের ওই সেতুতে আঘাত হানে ডালি কনটেইনার শিপ নামের জাহাজটি। এতে সেতুর একাংশ একেবারেই ধসে পড়ে।
এর প্রায় ১২ ঘণ্টা পর এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাহাজের ধাক্কায় সেতু ধসের ঘটনাটিকে ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা’ বলে অভিহিত করেন তিনি। এর পেছনে অন্য কোনো ধরনের ঘটনার ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছেন না বলেও উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন- জাহাজের আঘাতে মার্কিন সেতু ভেঙে নদীতে, ব্যাপক হতাহতের শঙ্কা
বহুবার এই সেতু অতিক্রম করেছেন জানিয়ে বাইডেন বলেন, এখন পর্যন্ত সব ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত করছে যে এটি একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এই মুহূর্তে অন্য কোনো কিছুর কোনো ইঙ্গিত নেই। এখানে আন্তর্জাতিক কোনো মহলের ইঙ্গিতে কিছু ঘটেছে বলে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমরা ছয়জন নিখোঁজ থাকার তথ্য পেয়েছি। তবে সংখ্যাটি পরিবর্তনও হয়ে যেতে পারে।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বাইডেন বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। তারা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া জঞ্জালগুলো সরাতে কাজ শুরু করেছে। সেনাবাহিনীর প্রকৌশল কোরের সদস্যরা চ্যানেলটি পরিষ্কার রাখার প্রয়াসে নেতৃত্ব দেবে।
বাল্টিমোরের সেতুটি ধসে যাওয়ার কারণে বাল্টিমোর বন্দরের কার্যক্রমও স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ব্যস্ত একটি বন্দর। ফলে সেতুটি যত দ্রুতসম্ভব যেন পুনর্নিমাণ করে সচল করা যায়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, বাল্টিমোর বন্দর আমাদের অন্যতম বৃহৎ একটি শিপিং হাব। গত বছর এই বন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে। অটোমোবাইল খাতের আমদানি-রফতানির জন্যও এটি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ একটি বন্দর। এই বন্দর দিয়ে বছর আট লাখ গাড়ি আনা-নেওয়া করা হয়। এই বন্দরের ওপর প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান নির্ভর করে। ফলে এই বন্দর সচল রাখাটা জরুরি। আর তার জন্য বাল্টিমোরের সেতুটিও দ্রুত সচল করাটা জরুরি।
সেতুটি সংস্কারের সব খরচ যুক্তরাষ্ট্র সরকার বহন করবে জানিয়ে জো বাইডেন বলেন, কংগ্রেস সদস্যদের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। সেই অনুমোদন নিয়ে এই সেতুটি সংস্কার বা পুননির্মাণের সব খরচ কেন্দ্রীয় সরকার থেকেই বহন করা হবে।
দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যে জাহাজ, তার মালিকপক্ষের কাছ থেকে সেতু সংস্কারের জন্য অর্থ নেওয়া হবে কি না— এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, তার জন্য আমরা অপেক্ষা করে বসে থাকব না। যত দ্রুতসম্ভব বাল্টিমোর ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে এক টুইটে বাইডেন বলেন, বাল্টিমোরের ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজ ধসে পড়া নিয়ে আমার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ব্রিফিং আয়োজনের নির্দেশনা আমি দিয়েছিলাম। প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি, এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতায় যেন কেন্দ্র থেকে সব ধরনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হয়।
ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে ধাক্কা দেওয়া ডালি কনটেইনার জাহাজটি সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী। ৩০০ মিটার দীর্ঘ পণ্যবাহী জাহাজটি শ্রীলঙ্কার কলম্বোর পথে যাত্রা করেছিল। জাহাজটির মালিক সিনার্জি মেরিন গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনো জানতে পারেননি। ঘটনাটি তারা তদন্ত করে দেখছেন।
এদিকে জাহাজ ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম মেরিন ট্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, সেতুর চারপাশের এলাকায় প্রচুর যানজট তৈরি হয়েছে। ওই পথে চলাচলকারী জাহাজের ভিড় লেগে গেছে।
সারাবাংলা/টিআর
জাহাজের ধাক্কা জো বাইডেন টপ নিউজ বাল্টিমোর সেতু মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেতু ধস