রমজান নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন বিতর্ক— যে ব্যাখ্যা দিলো ঢাবি
২১ মার্চ ২০২৪ ১৭:৩৬ | আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৪ ২২:৫০
রমজান সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠান আয়োজনে অনুমতি না দিতে অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি প্রাধ্যক্ষ, ডিন ও চেয়ারম্যানদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান। গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জনপরিসরে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উদ্ভূত পরিস্থিতির ‘ব্যাখ্যা’ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের আলোচনা সম্পর্কিত অনুষ্ঠান আয়োজনে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
প্রক্টরের পাঠানো সেই চিঠির কোথাও ‘নিষেধাজ্ঞা’ শব্দটির উল্লেখ নেই জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো সম্পূর্ণরূপে অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন।
আরও পড়ুন- রমজান নিয়ে অনুষ্ঠানের অনুমতি না দিতে অনুরোধ ঢাবি প্রক্টরের
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কখনো রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বলাবাহুল্য, প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আসছেন। কিছু রাজনৈতিক সংগঠনের অনুসারীরা রমজান মাস ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতিনীতি লঙ্ঘিত ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে।
সাংস্কৃতিক চর্চার নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিধিবদ্ধ রীতিনীতি ও নির্ধারিত স্থান রয়েছে, যা আমাদের সবার মেনে চলা উচিত। রমজানকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে এরকম অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এর আগে গত ১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর আয়োজনে ‘প্রোডাক্টিভ রামাদান’ অনুষ্ঠানে হামলার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ওই অনুষ্ঠান করার সময় শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুজনসহ ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালান। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সৈকত। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ‘প্রোডাক্টিভ রামাদান’ অনুষ্ঠানের ব্যানারে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে তর্কে জড়ালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিষয়টি মীমাংসা করেন।
পরে গত ১৫ মার্চ ঢাবি প্রক্টর ড. মাকসুদুর রহমান চিঠি পাঠান বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ ও আবাসিক হল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বলা হয়, কিছু রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ নেওয়ার জন্য কাজ করছে। এ অবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর
টপ নিউজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাবি প্রক্টর প্রক্টরের চিঠি রমজান নিয়ে অনুষ্ঠান