এনআইডির তথ্যে মোবাইল কোম্পানির ডাটাবেজ তৈরির নির্দেশ বাতিলে রুল
২০ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫২ | আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩৭
ঢাকা: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক মোবাইল কোম্পানিগুলোকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আলাদা ডাটাবেজ তৈরির নির্দেশনা কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সেইসঙ্গে আদালত জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য, যা নির্বাচন কমিশন বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এ মর্মে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন আদালত।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (২০ মার্চ) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, বিটিআরসি মোবাইল কোম্পানিগুলোকে তাদের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে তথ্য ভাণ্ডার তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। ওই নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, মোবাইল কোম্পানিগুলো তাদের গ্রাহকদের নাম, ঠিকানাসহ অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে। যা আগে মোবাইল কোম্পানিগুলো নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় পত্রের ডাটাবেইজ থেকে সংগ্রহ করতো।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিটিআরসির নির্দেশনা প্রতিফলন হলে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিজিকম টেকনোলজিসের সঙ্গে ডাটাবেইজের মাধ্যমে গ্রাহকদের তথ্য যাচাই করতে হবে। এই ডাটাবেইজের কারণে ডিজিকম টেকনোলজিসকে গ্রাহকপ্রতি ১০টাকা দিতে হবে। বর্তমানে মোবাইল কোম্পানিগুলো এই একই বিষয়ের জন্য নির্বাচন কমিশনেরকে পাঁচ টাকা দিতে হবে।
ওই রিপোর্ট সংযুক্ত করে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী মো. সারওয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া, মামুন আলীম ও রিপন বাড়ৈ রিট দায়ের করেন।
আজ ওই রিটের শুনানিতে এইচআরপিবির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বিটিআরসির এই নির্দেশনা যদি মোবাইল কোম্পানিগুলো অনুসরণ শুরু করে তাহলে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যাবে। যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এ ছাড়াও, জনগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা সংবিধান ও আইন পরিপন্থী।’
তিনি আরও বলেন, ‘নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রাইভেট কোম্পানির অধীনে গেলে সংবিধান অনুযায়ী স্বীকৃত মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হবে। বিটিআরসির এই সিদ্ধান্তের কারণে জনগণকে অতিরিক্ত পাঁচ টাকা করে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে দিতে হবে। যার পুরোটাই পাবে ডিজিকম টেকনোলজিস। এই সিদ্ধান্তের কারণে সরকার কোনোভাবেই লাভবান হবে না। বরং মধ্যস্বত্বভোগী হিসাবে লাভবান হবে ডিজিকম টেকনোলজিস।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আজ রুল জারি করেছেন বলে জানান মনজিল মোরসেদ।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম