১২ দিন পর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মরদেহ বুঝে পেল বাবা
১২ মার্চ ২০২৪ ১৭:১৬
ঢাকা: রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় ১২ দিন পর নাজমুল ইসলামের (২৫) মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে সিআইডি। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটায় বাবা নজরুল ইসলামের কাছে নাজমুলের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এ নিয়ে মোট ৪৬ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হলো।
সিআইডির সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের পরিদর্শক মো. মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘গত ১ মার্চ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে নাজমুলের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে তার পরিবারের সঙ্গে ডিএনএর নমুনা মিলে যাওয়ায় আজ (মঙ্গলবার) নাজমুল ইসলামের মরদেহ তার পরিবারের কাছে আমরা হস্তান্তর করেছি। এছাড়া গতকাল (সোমবার) আমরা বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি।’
রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান। ঘটনার পর তার দুই বন্ধুর লাশ পাওয়া গেলেও নাজমুলের সন্ধান মিলছিল না।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন নাজমুল। পাইপ ও ফিটিংস ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের চার ছেলের মধ্যে নাজমুল ছিলেন দ্বিতীয়।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন নাজমুল। অগ্নিকাণ্ডের কিছুক্ষণ আগে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে যান নাজমুলদের এক বন্ধু। তিনিই পরে বাকি বন্ধুদের পরিবারকে অগ্নিকাণ্ডের খবর জানান।
নাজমুলের মামা আনোয়ার হোসেন গাজী বলেন, ‘নাজমুল অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিল। ভার্সিটি শেষ করে নাজমুলকে বিদেশে পাঠানোর ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আগুনে সব স্বপ্ন মাটি হয়ে গেল।’
বেইলি রোডের ওই ভবনে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগে। এতে ৪৬ জন নিহত হন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নাজমুলের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত ১২দিন পর ছেলে নাজমুলের মরদেহ পেয়েছি। আমরা প্রথম দিনেই আমার ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেছিলাম। অন্য এক পরিবার শনাক্ত করায় ডিএনএ পর্যন্ত গড়ায়। আজকে ডিএনএ নমুনা মিলে যাওয়ায় ছেলের মরদেহ পেয়েছি।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আর কোনো বাবা যেন এভাবে তার ছেলেকে না হারায়। অনুরোধ করব, যারা ভবনের মালিক বা ব্যবসায়ী আছেন তারা যেন সাবধান হয়ে যান। ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেদিকে লক্ষ রাখবেন। আমার ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
তিনি জানান, তাদের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার নলবুনিয়া কান্দি গ্রামে। যাত্রাবাড়ী কাজলা নিজেদের বাড়ি। নাজমুল বর্তমানে রামপুরা বনশ্রী সি ব্লকের ৩ নম্বর রোডে থাকত। এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্সে অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ছিল।
নাজমুলের মরদেহ যাত্রাবাড়ীর কাজলায় নিয়ে প্রথম জানাজা হবে। এরপর গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
সারাবাংলা/এসএসআর/একে