জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
৬ মার্চ ২০২৪ ১৮:২৯ | আপডেট: ৬ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৯
ঢাকা: গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ৯ মার্চ শনিবার ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘গুপ্তহত্যা, অপহরণ, গুম, ক্রসফায়ার নিত্যদিনের ঘটনার পাশাপাশি ডামি সরকার মানুষের জরুরি সেবা বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি, সুপেয় পানির সংকটকে ঘনীভূত করেছে। এগুলো আজ সাধারণ মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ঋণক্লিষ্ট অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগে চরম নৈরাজ্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পূরণে চরম নির্যাতন, লুটপাট করা অর্থবিত্ত, আইন-শৃঙ্খলার নামে মানুষের স্বাধীনতা হরণ, অত্যাচার, চক্রান্ত, খুন, সন্ত্রাস, বিশ্বাস ঘাতকতা, কুৎসাসহ এদের কলঙ্কের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, তা কোনোভাবেই লুকোতে পারছে না। এরা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এক কোটি চল্লিশ লাখ টাকা ব্যয় করে আমেরিকা, লন্ডন ও সিঙ্গাপুরে ‘রোড-শো’ করেছিল জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য। যেহেতু তারা দুর্নীতির ভাবধারায় অনুপ্রাণিত, সুতরাং এই খাতে তারা কোনো বিদেশি বিনিয়োগ আনতে পারেনি। এরা বিদ্যুৎ খাতকে লোপাট করে আইনের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ‘ইনডেমনিটি আইন’ তৈরি করেছে।’
রিজভী বলেন, ‘পিডিবির তথ্য মতে গত ১৪ বছরে ১৩ দফায় খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে প্রায় ১৩০ শতাংশ। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুতের দাম ছিল ইউনিট প্রতি ৩.৭৩ টাকা। বর্তমানে দাম বেড়ে হয়েছে ৮.৯৫ টাকা। ইউনিট প্রতি এই দাম ২০০ ইউনিটের নিচে হলে, ২০০ থেকে ৩০০ ইউনিট হলে দাম হবে ইউনিট প্রতি ১২.০৩ টাকা। আর ৬০০ ইউনিটের উপরে কেউ যদি ব্যবহার করে তবে সেটির দাম হবে ইউনিট প্রতি ১৪.৬১ টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত ১৪ বছরে লুটপাট ১ লাখ ৪ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ সালে বিদ্যুৎ খাতে সরকার ৪৩ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ভতুর্কি বরাদ্দ করেছিল, যার বড় একটি অংশ ব্যয় হয়েছে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে।’
তিনি বলেন, ‘পিডিবির তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ সালে ক্যাপাসিটি চার্জের জন্য প্রায় ১৭ হাজার ১৫৫.৮৬ কোটি টাকা ছাড়া করা হয়েছে। জাতীয় সংসদে গত বছর প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, গত ১৪ বছরে ৮২টি বেসরকারি এবং ৩২টি রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বিশেষ করে ক্যাপাসিটি চার্জ সংক্রান্ত অব্যবস্থাপনা, লুটপাট ও বিদ্যুৎ খাতে পুকুর চুরির কারণে সরকার বিদ্যুতে বিপুল ভতুর্কি দিতে বাধ্য হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘সরকার কমিশন ও লুটপাট করার জন্য তুলনামূলক কম টাকায় নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে কয়লা, তেল, গ্যাস, ইত্যাদি পরিবেশ দূষণকারী ফসিল ফুয়েল ব্যবহার করে দেশের পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে আনছে। কয়লা, গ্যাস, তেল আমদানির নামে দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করছে। গ্যাস সংকটে দেশের শিল্প কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িতে বাড়িতে চুলা জ্বলছে না। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে রমজান মাসে ভয়াবহ দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে সাধারণ মানুষ।’
সারাবাংলা/এজেড/এমও