Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শিশুদের ধৈর্য-পরার্থপরতার শিক্ষা দ্বিতীয় শ্রেণিতেই দেওয়া উচিত’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ মার্চ ২০২৪ ২২:৪৪ | আপডেট: ৪ মার্চ ২০২৪ ০১:০০

ঢাকা: একটি শিশুকে প্রকৃত মানবিক মানুষ হিসেরবে গড়ে তুলতে প্রাথমিকের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তিন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। সেগুলো হলো- ধৈর্য, আত্নসংযম ও পরার্থপরতা। এসব শিক্ষা যারা শিশু বয়সের পায়, তাদের পরবর্তী শিক্ষার ফলাফল ও ভবিষ্যতে কর্মজীবনেও এর ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক সেমিনারে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। রোববার (৩ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস’র সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইকোনমিক্স’র অধ্যাপক ড. শ্যামল চৌধুরী।

গবেষণা প্রবন্ধে ড. শ্যামল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা একটি জরিপ পরিচালনা করেছি। বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নমুনা হিসেবে বাছাই করে ধৈর্য, আত্নসংযম ও পরার্থপরতা এই তিন বিষয়ে আলাদা ক্লাস করিয়েছি। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষককে আগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারপর সপ্তাহে একদিন একটি করে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর পর তাদের বছরে তিনটি স্কুলের পরীক্ষার নম্বর মূল্যায়ন করার পাশাপাশি আমরাও ডিসেম্বরে একটি আলাদা পরীক্ষার ব্যবস্থা করি।’

তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার পর ফলাফল হিসাব করে দেখা গেছে, যেসব শিশু এই ক্লাসগুলো করেছেন তারা অন্য শিশুদের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি ভালো ফলাফল করেছে। তবে এক্ষেত্রে যেটি পাওয়া গেছে যে, দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে দ্রুত এসব শিক্ষা ধারণ করতে পেরেছে। এর পর তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ভালো কার্যকর হয়েছে। পরবর্তীতে সময় গড়িয়েছে এসব শিক্ষার ক্ষেত্রে ততই ধারণ ক্ষমতা কমেছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘গবেষণা থেকে পাওয়া যায় যে, এ ধরণের শিক্ষা গ্রহণের ফলে শিশুদের মধ্যে সামাজিক ও মানবিক দক্ষতা বেড়েছে। এজন্য সরকারিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত এসব বিষয়ে শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে। তবে এই বিনিয়োগের পরিমাণ খুব বোশি না হলেও রিটার্ন বা ফল আসবে অনেক বেশি। এসব গুণাবলী পরবর্তী সময়ে তাদের ব্যক্তি ও কর্মজীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়তে সহায়ক হবে। কেননা আমরা দেখি যে, শিক্ষার সঙ্গে অর্থের সম্পর্ক আছে। যে যত বেশি শিক্ষা লাভ করে পরবর্তী জীবনে সে তত বেশি অর্থ আয় করার মতো কর্মে যুক্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে যদি এসব সামাজিক শিক্ষা দেওয়া যায় তাহলে এর অর্থনৈতিক প্রভাব অনেক বেশি।’

ড. শ্যামল চৌধুরী বলেন, ‘কোনো শিশু যদি ধৈর্যশীল হয় তাহলে সে বেশি পড়ালেখা করতে পারবে। পরবর্তী সময়ে ব্যক্তি ও কর্মজীবনে এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে। যে মানুষ ধৈর্যশীল হবে তিনি সবকিছু মেনে নিতে শিখবে, বেশি সঞ্চয় করতে পারবে। কর্মজীবনে ধৈর্যের সঙ্গে অনেক ভালো কাজ করতে পারবে। পরোপকারী হতে শিখলে ব্যক্তি, সমাজ ও কর্মজীবনে এর ব্যাপক প্রভাব আছে। পাশাপাশি আত্নসংযমী হলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখবে। জীবনে হতাশ হলে নেশা বা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হওয়ার মতো পরিস্থিতিতেও নিজেকে ঠিক রাখতে পারবে। এরকম অনেক ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ছোটবেলায় এসব শিক্ষা দেওয়া হয়। আমাদের দেশে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যসূচিতে এসব বিষয় যুক্ত করা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘গবেষণাটি ভালো হয়েছে। তবে এখনকার সিলেবাস পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সেখানে এসব না থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি কী পরিমাণ সরকারি বিনিয়োগ দরকার সেটিও গবেষণার মধ্যে উল্লেখ থাকলে ভালো হতো।’

ড. বিনায়ক সেন বলেন, ‘স্কুলে যাওয়ার পর থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিশুরা সবচেয়ে বেশি ধারণ করতে পারে। এটা এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমাদের মনে রাখা উচিত দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির মধ্যে যাতে কোনো শিশু ঝরে না পড়ে। বাংলাদেশে অতিদারিদ্র্যের দিন শেষ। এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শিক্ষায় দক্ষতা নির্মাণ। সেই দক্ষতার ভিত্তি স্থাপিত হয় ক্লাস টু ও থ্রির মধ্যেই। এ বিষয়ে সরকারকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।’

সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম

টপ নিউজ বিআইডিএস

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর