পরিচয় মিলল এক পরিবারের তিন সদস্যসহ আরও ৪ জনের
১ মার্চ ২০২৪ ২৩:২২
ঢাকা: রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় একই পরিবারের তিন জনসহ ৪ মরদেহ শনাক্ত করেছেন স্বজনরা। তারা হলেন, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজালাল উদ্দিন (৩৪) তার স্ত্রী গৃহিণী মেহেরুন্নেছা জাহান হেলালী (২৪) ও তাদের সাড়ে ৩ বছরের মেয়ে ফায়রুজ কাশেম জামিরা এবং কুষ্টিয়া জেলার সবুজ শেখের মেয়ে বৃষ্টি খাতুন (২৫)। এদের মধ্যে বৃষ্টি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন।
শুক্রবার (১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে এসে তিন জনের মরদেহ শনাক্ত করেন মেহেরুন্নেছার বাবা মোক্তার আলম হেলালী।
মোক্তার আলম জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মেয়ে মেহেরুন্নেছার বাসায় নাস্তা করেছিলাম। তার স্বামী শাহজালাল সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কেরাণীগঞ্জ হাসনাবাদ বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকায় থাকতেন। শাহজালাল অফিস থেকে ৩ দিনের ছুটি পেয়েছিলেন। সেই ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে খাগড়াছড়ি ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী রাজারবাগ এলাকায় গ্রিন লাইন বাসের টিকেটও কেটেছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে বাসে চড়ে রওনা দেয়ার কথা। সেজন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনজন বাসা থেকে রওয়ানা হন। এরপর বেইলি রোডে ওই ভবনের কোনো একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে উঠেছিলেন। সেখানেই আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, স্বজনরা তাদের চেহারা দেখেই পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছেন। রাতে তিনটি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এসে মেয়ের মরদেহ সনাক্ত করেন বাবা সবুজ শেখ। তিনি জানান, তার মেয়ের নাম বৃষ্টি খাতুন। তাদের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বনগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। আগুনে পুড়ে মারা গেছে মেয়ে বৃষ্টি খাতুন। এমন খবর পেয়ে কুষ্টিয়া থেকে ছুটে এসেছেন ঢাকায়। রাত থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে পড়ে থাকা মেয়ের মরদেহ দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করেন।
রমনা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান জানান, বার্ন ইনস্টিটিউটে এক নারীর মরদেহ আছে। তার বাবা মরদেহ শনাক্ত করেছেন। তবে কয়েকজন লোক বলছে এই নারী হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তবে তার হিন্দু কোনো স্বজন বা কোনো প্রমাণ নেই। বৃষ্টির মরদেহ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের একটি ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে ৪৬ জন মারা যায়। শুক্রবার ভোর থেকে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিকাল পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। আরও দুটি মরদেহ মর্গে আছে। যেটা পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে, মরদেহ দু’টির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
এছাড়া বার্ন ইনস্টিটিউটে বর্তমানে ভর্তি আছে ফয়সাল আহমেদ (৩৮), সুজন মন্ডল (২৪), প্রহিত (২৫) আবিনা (২৩), রাকিব হাসান (২৮), কাজি নাওশাদ হাসান আনান (২০), আজাদ আবরার (২৪), মেহেদী হাসান (৩৫), রাকিব (২৫) ও সুমাইয়া (৩১) ও
সাদ মাহমুদ (২৬)।
আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ইকবাল হোসেন (২৪) ও যোবায়ের (২১)।
সারাবাংলা/এসএসআর/এমও
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট বেইলি রোডে আগুন